রবি. সেপ্টে ২২, ২০২৪

মেট্রোরেলের সাড়ে ৭ হাজার বর্গফুট ক্যান্টিনের ভাড়া ১০০০ টাকা, ফেসবুকে সমালোচনা

ডিএমটিসিএলের সাড়ে ৭ হাজার বর্গফুট ক্যান্টিনের ভাড়া ১০০০ টাকার বিজ্ঞপ্তি।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) উত্তরা ডিপোতে অবস্থিত ৭৫৮০ বর্গফুট স্টাফ ক্যান্টিন পরিচালনার জন্য মাসিক ভাড়া দেওয়া হয়েছে মাত্র এক হাজার টাকায়। এতো কম টাকায় ভাড়া দেওয়ায় ফেসবুকে মেট্রোরেল প্যাসেঞ্জার কমিউনিটি গ্রুপে অনেকেই সমালোচনা করেছেন। আবার অনেকেই ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন।

গত বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) ডিএমটিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (স্টোর ও প্রকিউরমেন্ট) মো. নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি ক্যান্টিন পরিচালনার জন্য ভাড়া দেওয়া তথ্য জানা যায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভাড়া হিসেবে মাসিক এক হাজার টাকা হারে এক বছরের জন্য ভ্যাট ও আয়কর ব্যতীত সর্বমোট ১২ হাজার টাকা মূল্যে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের আওতায় পরিচালনাধীন এমআরটি লাইন-৬ এর উত্তরা ডিপোতে অবস্থিত ৭৫৮০ বর্গফুট স্টাফ ক্যান্টিন পরিচালনার উদ্দেশ্যে ১ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে দাখিলকৃত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান খন্দকার এন্টারপ্রাইজের দরপত্রটি ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃক গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হয়েছে।

এই নোটিশ জারি করার সাত দিনের মধ্যে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে তিন বছরের জন্য চুক্তি সম্পাদন করতে সম্মত রয়েছেন মর্মে লিখিতভাবে জানানোর আহ্বান করা হয় ডিএমটিসিএলের বিজ্ঞপ্তিতে। এছাড়াও কার্য সম্পাদন জামানত হিসেবে তিন লক্ষ টাকা আগামী ২৮ মার্চ জমা দিতে বলা হয়।

ভাড়ার বিষয়ে ডিএমটিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (স্টোর ও প্রকিউরমেন্ট) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, এটা ওপেন টেন্ডার হয়েছে। টেন্ডারের মাধ্যমে এটা নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী এই সব পক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।

এদিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের গতকাল শনিবার (১৬ মার্চ) ফেসবুকে মেট্রোরেল প্যাসেঞ্জার কমিউনিটি গ্রুপে ওই বিজ্ঞপ্তিটি মো. সুজান নামের আইডি থেকে ‘মাসে ১ হাজার টাকা ভাড়া একটু বেশিই অমানবিক হয়ে গেলো না?’ এই ক্যাপশনে পোস্ট করা হয়।

ওই পোস্টে কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তের পক্ষে-বিপক্ষে অনেকেই মন্তব্য করেছেন। মো. আকতারউজজামান লেখেন, ‘সমস্যা নাই, পকেট কাটার জন্য সাধারণ জনগণের পকেট তো রয়েছে।’

হোসেন মোহাম্মদ শিশির লিখেছেনে, ‘এই যে সবে চুরি শুরু হচ্ছে। এরপর প্রতিটি স্টেশনের ফুড কর্ণার এভাবে ইজারা দেয়া হবে। তারপর ধীরে ধীরে অন্যান্য বিভাগ। ২০ বছর পর মেট্রোরেল থাকবে লসে। বিমান, রেল, ব্যাংকসহ সরকারি বাকী প্রতিষ্ঠানগুলোও এইভাবে লোকসানি খাত হইছে।’

শাহ কামাল লিখেছেন, ‘এই টেন্ডার আগেও একবার হয়েছিল তখন কোনো পক্ষ নিতে আসেনি কেননা এটা শুধুমাত্র স্টাফ ক্যান্টিন। এই স্টাফ ক্যান্টিনে খাবার খাবে শুধুমাত্র যারা ডিপোতে থাকবেন। আবার যারা ডিপোতে থাকবেন তারা সকলেই যে খাবে তা কিন্তু না। কেননা ম্যাক্সিমাম কর্মকর্তা, কর্মচারী নিজ বাসা থেকে দুপুরের লাঞ্চ নিয়ে আসেন। যারা মেট্রোরেল স্টেশনে কর্মরত তারা কিন্তু ডিপোতে এসে খেতে পারবেন না দায়িত্বের জন্য। তাই স্টাফ ক্যান্টিন যারা চালাবে এমনও হতে পারে তারা লসে থাকবে। এটা নামমাত্র মূল্যে দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে চাহিদার ভিত্তিতে ভাড়াও বাড়বে ‘

এদিকে, মেট্রোরেলে ডিপোতে কর্মরত কয়েজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ডিপোতে তিন শিফটে কাজ হয়। গড়ে ১৫০ জনের মত কর্মকর্তা-কর্মচারী ডিপোতে কাজে থাকেন। এছাড়া ডিপোতে কর্মীদের কর্মদক্ষতা উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মশালারও আয়োজন হয়ে থাকে।

জানা যায়, এই ক্যান্টিনে খাবারের দাম কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করে দেবে এবং ক্যান্টিনে রান্নাবান্নার কাজ করা যাবে না, ক্যাটারিং সার্ভিস দিতে হবে এমন সব শর্তে কোনো ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ক্যান্টিনের দায়িত্ব নিতে আগ্রহী ছিল না। ফলে তৈরি হওয়ার পর দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও ক্যান্টিন চালু করা যায়নি।

By admin

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *