বিমানবন্দর এলাকায় হর্ন বাজালেই ৫০০ টাকা জরিমানা


হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তিন কিলোমিটার এলাকায় হর্ন বাজালেই করা হবে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা জরিমানা। চালকদের সতর্ক করতে প্রথম সপ্তাহে চলবে শুধুই প্রচার-প্রচারণা। তাতে কাজ না হলে প্রয়োগ করা হবে আইন। কার্যক্রম উদ্বোধন করে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এমন কথা জানালেও হর্নের উৎপাত থামেনি বিমানবন্দর সড়কে। নানা অজুহাতে অনবরত হর্ন বাজিয়ে যাচ্ছেন চালকরা।

হর্ন বাজানো নিষেধ। এমন ফেস্টুনের পাশেই দেদারসে বাজছে হর্ন। শব্দে যেন কান পাতাই দায়। কেউ বাজাচ্ছেন অভ্যাসে, কেউবা জ্যামে বিরক্ত হয়ে।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে বের হবার এমন দৃশ্য এখানে অহরহ। বিরক্ত যাত্রীরাও। অথচ অক্টোবরের প্রথম দিন থেকে বিমানবন্দরকে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হয়েছিল মাস খানেক আগেই। চলেছে প্রচার প্রচারণাও।

চালকদের সাথে কথা বলে জানা গেলো অনেকেই সেটা জানেন না। আবার যারা জানেন, তারা বলছেন হর্ন না দিয়েও উপায় নেই। জ্যামে বসে থাকতে হয় দীর্ঘসময়।

একজন ড্রাইভার বলেন, ‘হর্ন বাজানো যাবে না এটা আমি জানি না। আর হর্ন বাজাচ্ছি জ্যামের কারণে। হর্ন বাজানো ছাড়া এখানে আর কোনো উপায় নেই।’

অন্য একজন ড্রাইভার বলেন, ‘আমার মনে হয় না কার্যকর হবে। কারণ সামনে যে জ্যামের অবস্থা, হর্ন না দিলে তো কেউ সাইড দেবে না।’

বিমানবন্দর মহাসড়কের দৃশ্যও একই রকম, কারও কোনো বিকার নেই। চোখের সামনে নির্দেশনা দেখেও অনবরত বাজিয়ে যাচ্ছেন হর্ন।

নীরব এলাকা ঘোষণার আগে ও পরে শব্দদূষণের মাত্রা কতখানি কমলো তা যাচাইয়ে বসানো হয়েছে চারটি শব্দ ধারণকারী যন্ত্র।

একজন মাইক্রোচালক বলেন, ‘কিছু মানুষ আছে যারা হর্নটা নিয়মিত বাজায়। এটা তাদের অভ্যাস হয়েছে। বাংলাদেশে একটা কালচার হয়েছে যে হর্ন ছাড়া গাড়ি চলে না।’

অথচ আজ (মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর) সকালেই উদ্বোধন হয়েছে বিমানবন্দরকে নীরব এলাকা ঘোষণা কার্যক্রম। হয়েছে র‌্যালি। অংশ নিয়েছে বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, পরিবেশ বন ও জলবায়ু, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, বিআরটিএ, ট্রাফিক পুলিশ, রোডস অ্যান্ড হাইওয়ে, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির ঊর্ধ্বতনরা।

নীরব এলাকা উদ্বোধন করে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া জানান, এই কার্যক্রম সফল করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে। পর্যায়ক্রমে দেশের অন্যান্য বিমানবন্দরেও চালু হবে নীরব এলাকা।

তিনি বলেন, ‘হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে তিন কিলোমিটার মহাসড়ক ঘোষিত হর্ন মুক্ত এলাকা ঘোষণা করেছে। এছাড়া উক্ত এলাকায় প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আজ থেকে আমরা এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন শুরু করছি। বাংলাদেশের সকল বিমানবন্দরে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় করে আমরা নিরব এলাকা কর্মসূচি গ্রহণ করবো অতি শিগগিরই। এবং বাস্তবায়ন করবো। যেন শুধু দেশই নয় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলকে একটা ভালো অভিজ্ঞতা দিতে পারি।’

র‌্যালি শেষ গণমাধ্যমে কথা বলেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। জানান, শুরুতে হর্ন না বাজাতে প্রচারণা চালানো হবে। পর্যায়ক্রমে প্রয়োগ করা হবে আইন। জরিমানার বিধান সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা।

তিনি বলেন, ‘আমরা শব্দদূষণের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে বিধিতেও কিছু সংশোধন রাখার চেষ্টা করছি। যতটা সময় লাগুক না কেন ততটা সময় আমরা দেবো। এই তিন কিলোমিটার বেছে নেয়ার একটা কারণ হচ্ছে, খানে কোনো স্বল্প গতির বাহন চলছে না। যে যুক্তিটা সবসময় দেয়া হয় হর্ন বাজানোর জন্য সেটা এখানে প্রযোজ্য হবে না। আহ্বানের সাথে সাথে আইন প্রয়োগের কাজটাও শুরু করতে চাই। যদি সফলতার বিচারে বলেন , আমি মনে করি কাজটা শুরু করাই একটা সফলতা।’

বিমানবন্দর দিয়ে এই কার্যক্রম শুরু করলেও ধীরে ধীরে ঢাকার প্রধান প্রধান সড়ক গুলোতেও নীরব এলাকা করা হবে।সুত্র:এখন টিভি।

ট্যাগ:

ফতুল্লায় গার্মেন্টের ঝুট দখল নিতে বিএনপি’র নেতা মজিবুর ও যুবলীগ নেতা মিঠু গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৭

বিমানবন্দর এলাকায় হর্ন বাজালেই ৫০০ টাকা জরিমানা

প্রকাশঃ 03:08:12 pm, Tuesday, 1 October 2024


হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তিন কিলোমিটার এলাকায় হর্ন বাজালেই করা হবে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা জরিমানা। চালকদের সতর্ক করতে প্রথম সপ্তাহে চলবে শুধুই প্রচার-প্রচারণা। তাতে কাজ না হলে প্রয়োগ করা হবে আইন। কার্যক্রম উদ্বোধন করে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এমন কথা জানালেও হর্নের উৎপাত থামেনি বিমানবন্দর সড়কে। নানা অজুহাতে অনবরত হর্ন বাজিয়ে যাচ্ছেন চালকরা।

হর্ন বাজানো নিষেধ। এমন ফেস্টুনের পাশেই দেদারসে বাজছে হর্ন। শব্দে যেন কান পাতাই দায়। কেউ বাজাচ্ছেন অভ্যাসে, কেউবা জ্যামে বিরক্ত হয়ে।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে বের হবার এমন দৃশ্য এখানে অহরহ। বিরক্ত যাত্রীরাও। অথচ অক্টোবরের প্রথম দিন থেকে বিমানবন্দরকে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হয়েছিল মাস খানেক আগেই। চলেছে প্রচার প্রচারণাও।

চালকদের সাথে কথা বলে জানা গেলো অনেকেই সেটা জানেন না। আবার যারা জানেন, তারা বলছেন হর্ন না দিয়েও উপায় নেই। জ্যামে বসে থাকতে হয় দীর্ঘসময়।

একজন ড্রাইভার বলেন, ‘হর্ন বাজানো যাবে না এটা আমি জানি না। আর হর্ন বাজাচ্ছি জ্যামের কারণে। হর্ন বাজানো ছাড়া এখানে আর কোনো উপায় নেই।’

অন্য একজন ড্রাইভার বলেন, ‘আমার মনে হয় না কার্যকর হবে। কারণ সামনে যে জ্যামের অবস্থা, হর্ন না দিলে তো কেউ সাইড দেবে না।’

বিমানবন্দর মহাসড়কের দৃশ্যও একই রকম, কারও কোনো বিকার নেই। চোখের সামনে নির্দেশনা দেখেও অনবরত বাজিয়ে যাচ্ছেন হর্ন।

নীরব এলাকা ঘোষণার আগে ও পরে শব্দদূষণের মাত্রা কতখানি কমলো তা যাচাইয়ে বসানো হয়েছে চারটি শব্দ ধারণকারী যন্ত্র।

একজন মাইক্রোচালক বলেন, ‘কিছু মানুষ আছে যারা হর্নটা নিয়মিত বাজায়। এটা তাদের অভ্যাস হয়েছে। বাংলাদেশে একটা কালচার হয়েছে যে হর্ন ছাড়া গাড়ি চলে না।’

অথচ আজ (মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর) সকালেই উদ্বোধন হয়েছে বিমানবন্দরকে নীরব এলাকা ঘোষণা কার্যক্রম। হয়েছে র‌্যালি। অংশ নিয়েছে বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, পরিবেশ বন ও জলবায়ু, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, বিআরটিএ, ট্রাফিক পুলিশ, রোডস অ্যান্ড হাইওয়ে, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির ঊর্ধ্বতনরা।

নীরব এলাকা উদ্বোধন করে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া জানান, এই কার্যক্রম সফল করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে। পর্যায়ক্রমে দেশের অন্যান্য বিমানবন্দরেও চালু হবে নীরব এলাকা।

তিনি বলেন, ‘হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে তিন কিলোমিটার মহাসড়ক ঘোষিত হর্ন মুক্ত এলাকা ঘোষণা করেছে। এছাড়া উক্ত এলাকায় প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আজ থেকে আমরা এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন শুরু করছি। বাংলাদেশের সকল বিমানবন্দরে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় করে আমরা নিরব এলাকা কর্মসূচি গ্রহণ করবো অতি শিগগিরই। এবং বাস্তবায়ন করবো। যেন শুধু দেশই নয় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলকে একটা ভালো অভিজ্ঞতা দিতে পারি।’

র‌্যালি শেষ গণমাধ্যমে কথা বলেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। জানান, শুরুতে হর্ন না বাজাতে প্রচারণা চালানো হবে। পর্যায়ক্রমে প্রয়োগ করা হবে আইন। জরিমানার বিধান সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা।

তিনি বলেন, ‘আমরা শব্দদূষণের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে বিধিতেও কিছু সংশোধন রাখার চেষ্টা করছি। যতটা সময় লাগুক না কেন ততটা সময় আমরা দেবো। এই তিন কিলোমিটার বেছে নেয়ার একটা কারণ হচ্ছে, খানে কোনো স্বল্প গতির বাহন চলছে না। যে যুক্তিটা সবসময় দেয়া হয় হর্ন বাজানোর জন্য সেটা এখানে প্রযোজ্য হবে না। আহ্বানের সাথে সাথে আইন প্রয়োগের কাজটাও শুরু করতে চাই। যদি সফলতার বিচারে বলেন , আমি মনে করি কাজটা শুরু করাই একটা সফলতা।’

বিমানবন্দর দিয়ে এই কার্যক্রম শুরু করলেও ধীরে ধীরে ঢাকার প্রধান প্রধান সড়ক গুলোতেও নীরব এলাকা করা হবে।সুত্র:এখন টিভি।