মধ্যরাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে আশ্রয় নেয়া কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মারধর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় পেট্রোল বোমাও ছোড়া হয়। পরে রাত আড়াইটার দিকে বিভিন্ন হল থেকে কয়েকশ শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে এসে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এ ঘটনায় পুলিশের রাবার বুলেট ও টিয়ারশেলের আঘাতে বাংলাদেশ টুডের জাবি প্রতিনিধি জুবায়ের, বণিক বার্তার মেহেদী মামুন, নিউজ বাংলা ও দৈনিক বাংলার সারজিলসহ প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
সোমবার (১৫ জুলাই) সন্ধ্যার সময় বটতলায় কোটা আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এরপর রাত ৯টার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। ঘণ্টা দেড়েক পর উপাচার্য তার বাসা থেকে বেরিয়ে এসে হামলার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করে বিচারের আশ্বাস দেন। কিন্তু তাতে আশ্বস্ত হতে না পেরে উপাচার্যের বাসভবনের সামনেই অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা।
এর মধ্যে রাত ১২টার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানোা হয়। জাবি শাখা ছাত্রলীগসহ বহিরাগত ছাত্রলীগের দেড় শতাধিক নেতাকর্মী এ হামলায় অংশ নেন বলে অভিযোগ করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
তারা বলেন, ‘হামলাকারীরা হেলমেট পরে ছিল এবং তাদের হাতে ধারালো অস্ত্র ছিল। তারা পেট্রল বোমা ছোড়ে। আমরা উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে আশ্রয় নিলে আমাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়া হয়।’
তারা আরও বলেন, ‘রাত সোয়া ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে পুলিশ এলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা সেখান থেকে চলে যান। এরপর রাত পৌনে দুটার দিকে আবার উপাচার্যের বাসভবনের ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা বেশ কয়েকটি পেট্রল বোমা ছোড়েন এবং বাসভবনের প্রধান ফটকের লাইট ভাঙচুর করেন। এরপর উপাচার্যের উপস্থিতিতেই আমাদের মারধর করেন।’
ওই সময় ফেসবুক লাইভে শিক্ষার্থীদের বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার এবং কান্নার শব্দ শোনা যায়। এরপর রাত সোয়া দুটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া দিলে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা পরে সেখানে থাকা পুলিশের ওপর চড়াও হলে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়।সুত্র:সময়টিভি।