শনি. সেপ্টে ২১, ২০২৪

কক্সবাজারে ‘বোরি বিচ নতুন সৈকত, যেতে পারবেন কি?

কক্সবাজারে ‘বোরি বিচ’ নামে একটি নতুন সমুদ্র সৈকতের উদ্বোধন করা হয়েছে। নতুন এই সৈকতকে ‘সংরক্ষিত এলাকা’ ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এখানে হবে জীববৈচিত্র্য নিয়ে গবেষণা।

কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনার পাড়া সৈকতের ২.৯১ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ‘বোরি বিচ’ নামকরণ করা হয়।

শনিবার (৮ জুন) বিশ্ব সমুদ্র দিবস-২০২৪ উপলক্ষে সৈকতটি উদ্বোধন করেছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আলী হোসেন।

বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বোরি) গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনার পাড়া সৈকতের ২.৯১ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ‘বোরি বিচ’ নামকরণ করা হয়।

জায়গাটিকে কাছিম, রাজকাঁকড়া ও শামুক-ঝিনুকসহ সমুদ্র উপকূলের নানা প্রাণীর অভয়ারণ্য হিসেবে গড়ে তোলা হবে। সেই সঙ্গে সমুদ্রের ভাঙা-গড়া পর্যবেক্ষণ এবং গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে এটি পরীক্ষণমূলক কার্যক্রম হিসেবে পরিচালিত হলেও সফলতার ভিত্তিতে দেশের সব সমুদ্র এলাকাকে কীভাবে সংরক্ষণ করে জনস্বার্থে ব্যবহার করা যায় সেই উদ্যোগ নেয়া হবে।

এর আগে সমুদ্র দিবস উপলক্ষে দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার সকালে রামু উপজেলার পেঁচারদ্বীপে অবস্থিত বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের ক্যাম্পাসে সৈকত পরিচ্ছন্নতা অভিযান দিয়ে দিবসের সূচনা করা হয়।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আলী হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এরপর বোরির সম্মেলন কক্ষে সেমিনার, ওশান অলিম্পিয়াড, বৃক্ষরোপন, থ্রিডি মুভি প্রদর্শনসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

বোরির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. তৌহিদা রশীদের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম ইউনিটের সচিব অবসরপ্রাপ্ত রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. খুরশেদ আলম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. বেনু কুমার দে, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম।

সমুদ্র দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শহীদুল ইসলাম, বিজ্ঞানী ড. নওশাদ হক ও ড. আফতাব আলম খান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আলী হোসেন বলেন, এবারের সমুদ্র দিবসের লক্ষ্য হচ্ছে সাধারণ জনগণের মধ্যে সমুদ্রের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা, সমুদ্র পরিবেশ-প্রতিবেশ সংরক্ষণ ও করণীয় সম্পর্কে সর্বস্তরের জনগণকে সচেতন করা।

সামুদ্রিক মৎস্য,পর্যটন, উপকূলীয় জলজ উদ্ভিদ-প্রাণী, তেল, গ্যাস, খনিজ পদার্থ, ওষুধসহ আরও অনেক সম্পদ আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আলী হোসেন বলেন, সমুদ্র সম্পদের টেকসই আহরণ ও ব্যবস্থাপনায় অবদান রাখার জন্য আমাদের ভালো সুযোগ আছে। বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট জাতীয় কৌশল পূরণ এবং আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখতে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে।

এসময় সকল সরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, বিজ্ঞানী ও সংস্থাকে একসাথে কাজ করে সমুদ্র ও সমুদ্র সম্পদকে রক্ষার আহ্বান জানান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম ইউনিটের সচিব মো. খুরশেদ আলম বলেন, সমুদ্র নিয়ে গবেষণার জন্য সরকার নানা ধরনের সুযোগ সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। এগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে সুনীল অর্থনীতিতে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। উন্নয়নের জন্য সমুদ্র নিয়ে আরও বেশি পড়াশোনা ও গবেষণা দরকার।

কর্মসূচীর সবশেষে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনার পাড়া সৈকতের ২.৯১ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বোরির গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ‘সংরক্ষিত এলাকা’ ঘোষণা করা হয়। যা ‘বোরি বিচ’ নামে পরিচিত হবে।
 

By admin

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *