দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ; বাতাসে যেন মরুভূমির আগুনের হল্কা। থার্মোমিটারের পারদ দিন দিন ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠছে। দেশজুড়ে জারি করা হয়েছে গত শুক্রবার থেকে তিনদিনের জন্য তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা বা হিট অ্যালার্ট। গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষ; অসুস্থ হয়ে পড়ছে অনেকেই। শুধু তাই নয়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হিটস্ট্রোকে শিশু ও বৃদ্ধসহ ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। দেশজুড়ে এমন খরতাপ পরিস্থিতি আরও কয়েক দিন বিরাজ করবে বলে জানানো হয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে।
দেশের দু’টি জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তীব্র তাপপ্রবাহ অতি তীব্র তাপপ্রবাহে রূপ নিয়েছে। আর শুক্রবার তাপমাত্রার বিষয়ে আবহাওয়া বিভাগ সতর্কতা জারির পর শনিবার হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে দেশের তিন জেলায় চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। জেলাগুলোর মধ্যে চট্টগ্রামে দু’জন, চুয়াডাঙ্গা ও পাবনায় একজন করে দু’জন।
এদিকে শনিবার বিকাল ৩টায় যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গায় ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি এবং পাবনায় রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রাও আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। শনিবার রেকর্ড হয়েছে ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা শুক্রবার ছিল ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এমন তাপপ্রবাহ আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ এবং কোনো কোনো অঞ্চলে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মানুষের পাশাপাশি প্রাণিকুলেও হাঁসফাঁস অবস্থা। বেশি সমস্যায় পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। প্রচণ্ড গরমে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না কেউ। একই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে ডায়রিয়াসহ নানা রোগ। ভিড় বাড়ছে হাসপাতালগুলোতে। চিকিৎসকরা বলছেন, স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
আবহাওয়াবিদদের মতে, তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তা মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ ডিগ্রি থেকে ৩৯.৯ ডিগ্রি হলে মাঝারি তাপপ্রবাহ, ৪০ ডিগ্রি থেকে ৪১.৯ পর্যন্ত তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তা অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে গণ্য হয়। সেই হিসাবে যশোর এবং চুয়াডাঙ্গা জেলায় বইছে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ।