ষ্টাফ রিপোর্টার: নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও তথ্য উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে বৈষম্য বিরোধী সাংবাদিক ঐক্যের নেতৃবৃন্দ। একই সাথে ফ্যাসিবাদের দোসরদের দ্বারা বৈষম্য বিরোধী সাংবাদিক ঐক্যের সাংবাদিকদের উপর পরিকল্পিত হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিদের গ্রেফতারের দাবীও জানানো হয়েছে স্মারকলিপিতে। বুধবার (৬ নভেম্বর) ঢাকা সচিবালয়ে স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের কতিপয় সদস্যদের অপকর্ম তুলে ধরেন বৈষম্য বিরোধী সাংবাদিক ঐক্যের প্রতিনিধিবৃন্দ।
স্বারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, ঐতিহ্যবাহী নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে দীর্ঘদিন যাবৎ সাংবাদিকতা পেশার নামে একটি সিন্ডিকেট এমনভাবে গড়ে তোলা হয়েছে। এ সিন্ডিকেটের কুচক্রিরা ছাড়া অন্য কোন সাংবাদিক যেন প্রেসক্লাবের কমিটি দূরের কথা সদস্য পদও লাভ করতে না পারে, এজন্য তারা জটিলতম নিয়ম-কানুন সৃষ্টি করে রেখেছে।
গত ২৯ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে স্থানীয় গণমাধ্যমের সাংবাদিকবৃন্দ সদস্য পদ পেতে স্মারকলিপি প্রদান করতে গেলে তাদের আটক করে রেখে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্র ও হাই ভোল্টের টিজার দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বরতা চালানো হয়। সে সময় সাংবাদিক মাসুদ রানা রনিসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে রক্তাক্ত জখম হয়। পুলিশ আহত সাংবাদিকদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয় যার নং- ১২ তারিখ-২৯/১০/২০১৪ইং।
স্মারকলিপিতে আরো উল্লেখ করা হয়, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের অনেক সদস্যই পেশাগতভাবে সংবাদ সংগ্রহের সাথে বিন্দুমাত্র জড়িত নয়। বিগত স্বৈরাচারী সরকারের পালিত সন্ত্রাসী গডফাদার শামীম ওসমানের সহযোগী হিসেবে পরিচিত এসব সাংবাদিক নামধারী বিতর্কিত সদস্যরা গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসা, গরুর হাট ইজারা, টেন্ডারবাজী, ভূমিদস্যুতা সহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িত ছিলো। ছাত্র জনতার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে তারা স্বৈরাচারের পক্ষ নিয়ে গণ্য আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। এখন তারা খোলস পাল্টে বিএনপি-জামায়াতের সাথে মিশে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, নারায়ণগঞ্জে একই পত্রিকার সম্পাদক ও নির্বাহী সম্পাদক যথাক্রমে প্রেসক্লাবের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী সাংবাদিকদের মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল জুলুম খাটিয়ে ও মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে তাকে নিঃস্ব করে দেওয়ার ঘটনা ঘটায়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামীলীগের দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে মিলে ছাত্র-জনতার উপর হামলা চালায়, সে সকল সন্ত্রাসীরা প্রেসক্লাবে বহাল রয়েছে। প্রেসক্লাব গঠনের পর থেকে মৃত এবং প্রবাসী সাংবাদিকদের পদ শূণ্য ঘোষনা করা হয় নি। যার ফলে গঠনতান্ত্রিক শূণ্যতায় জর্জরিত এ ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটি। প্রেসক্লাবের ম্যানেজার সহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এবং সদস্যরা রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছে।
স্মারকলিপি প্রদানের পূর্বে জাতীয় প্রেসক্লাবের সিনিয়র বেশ কয়েকজন সদস্যের সাথে বৈঠক করেছেন বৈষম্য বিরোধী সাংবাদিক ঐক্যের প্রতিনিধিগণ এবং নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবকে দালাল মুক্ত করা এবং বৈষম্যহীন পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে আগামী দিনে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।