নারায়ণগঞ্জে ছাত্র জনতার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হকার লীগের নেতা আসাদুল ইসলাম আসাদকে (৪৫) আটক করেছে র্যাব-১১।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) রূপগঞ্জের গাউছিয়া এলাকা থেকে তাকে আটক করে র্যাব। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান র্যাব ১১ এর এএসপি সনদ বড়ুয়া।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসাদ জানান, তিনি নিজেকে নারায়ণগঞ্জ মহানগরের হকার সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর হকার লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ পেলেও কয়েক বছর আগেও সে সড়কের ফুটপাতে হকারি করতো। এক সময় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের সাথে সখ্যতা তৈরি করে সে হকারদের নেতা হয়ে যায়।
২০১৮ সালে সিটি করর্পোরেশন ও প্রশাসনের ফুটপাত হকারমুক্ত করার যৌথ উদ্যোগের বিরোধীতা করে আন্দোলন করা নেতাদের অগ্রভাগে ছিল সে। একই বছরের ১৬ জানুয়ারি হকার মুক্ত সড়ক ইস্যুকে কেন্দ্র করে হকারদের নিয়ে হামলা করে জনগণ, সাংবাদিক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য’সহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত করে।
২০২১ সালের ৯ মার্চ ফুটপাতে বসার দাবিতে বিক্ষোভ করে হকাররা। ওই সময় হকারদের নেতৃত্ব দেয় আসাদ। ওইদিন বিকেলে সড়কে আগুন দিয়ে যানবাহনে ভাঙচুর চালায় হকাররা। বাধা দিলে পুলিশের সাথে তাদের সংঘর্ষ বাধে। ওই ঘটনায় পুলিশের উপর হামলা, অস্ত্র লুটের চেষ্টা, যানবাহন ভাঙচুর ও সড়কে আগুন দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগে গ্রেপ্তার হয় আসাদ। একই বছরের ১৪ অক্টোবর ফুটপাতে দোকান বসানোকে কেন্দ্র করে তর্কের জেরে খুন হন ১৮ বছর বয়সী তরুণ জোবায়ের হোসেন। ওই তরুণও ফুটপাতে হকারি করতো। তাকে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়। ওই হত্যা মামলারও আসামি এই আসাদ। পরে নিহত জুবায়েরের পরিবারকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। নিহত জুবায়েরের মা মুক্তা বেগম এই ঘটনায় থানায় আরও একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, নিজেকে হকার নেতা বলে পরিচয় দেওয়া আসাদুল ইসলাম ওরফে আসাদ নারায়ণগঞ্জ এর চাষাড়া এলাকায় মূলত চাঁদাবাজি করে বেড়ায়। ঐ এলাকার সড়কের ফুটপাতে বসতে হলে আসাদকে দৈনিক চাঁদা দিতে হয়। এই চাঁদার একটি অংশ ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতাদের কাছে পৌঁছে দিত আসাদ।
আটককৃত আসামির বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।