ভক্ত-দর্শনার্থীদের নজর কাড়ছে ধানের প্রতিমা

সংগৃহীত

পূজা উদযাপনে দেবী দুর্গার প্রতি ভক্তি আকর্ষণের পাশাপাশি দর্শনার্থীদের দৃষ্টি কাড়তেই ব্যতিক্রমী প্রতিমা তৈরিসহ নানা উদ্যোগ নেন আয়োজকরা। এবার তেমনি ৫০ কেজি ধান দিয়ে প্রতিমা তৈরি করে আলোচনায় এসেছেন এক কারিগর। একেকটি সোনালী ধান দিয়ে শিল্পীর সুনিপুণ হাতে তৈরি নাটোরের দেবী দুর্গার ব্যতিক্রম, অপূর্ব সুন্দর প্রতিমা নজর কাড়ছে সবার। খুব কষ্টের হলেও এমন প্রতিমা তৈরি করতে পেরে খুশি প্রতিমা শিল্পীরা। নজরকাড়া এই প্রতিমা দেখে খুশি ভক্ত ও দর্শনার্থীরা।

নাটোর শহরের লালবাজার এলাকার বিশ্বজিৎ পাল ও তার পরিবারের সদস্যরা  ধান দিয়ে এই প্রতিমা তৈরি করে রীতিমত সাড়া ফেলে দিয়েছেন। প্রতিমাটি সম্পূর্ণ তৈরি করতে ৩৫ দিনের মতো সময় লেগেছে বলে জানান বিশ্বজিৎ পাল।  দুর্গাসহ ৮টি প্রতিমা তৈরি করতে মোট ধান লেগেছে ৫০ কেজি। প্রতিমাটি ৯৫ হাজার টাকায় ক্রয় করেছেন শহরের কদমতলী এলাকার রবি সুতম সংঘ।

প্রতিমা তৈরির কারিগর  (প্রতিমা শিল্পী) বিশ্বজিৎ পাল বলেন, বাঁশ, কাঠের ফ্রেমে খড় সাজিয়ে মাটি বসিয়ে প্রতিমা নরম থাকতেই বিশেষ কায়দায় একটি একটি সোনালী ধান বসানো হয়েছে। বিশেষ করে প্রতিমার মুখের দিকে খুব যত্ন করে ধান বসাতে হয়েছে। প্রতিমাগুলোতে ৫০ কেজি ধান ব্যবহার করা হয়েছে। শুরু থেকে প্রতিমার কাজ শেষ করতে ৩৫ দিনের মতো সময় লেগেছে।

তিনি আরও বলেন, ব্যতিক্রমধর্মী এটাই আমার প্রথম কাজ। ইতোমধ্যে মিডিয়ার কল্যাণে দেশ ছাপিয়ে বিদেশেও ধান দিয়ে প্রতিমা তৈরির খবর পৌঁছে গেছে। সবাই খুব পছন্দ করছে এবং যারা দেখতে আসছে তারা প্রশংসা করছে। এটাই আমার প্রাপ্তি। সকলের প্রশংসা সামনে এ ধরনের কাজ করতে আমাকে অনুপ্রাণিত করবে।

ব্যতিক্রমী ধানের তৈরি প্রতিমা দেখতে আসা শিলা দত্ত বলেন, আমার জানা মতে বাংলাদেশে নাটোরেই প্রথম ধান দিয়ে তৈরি হলো প্রতিমা। খুবই যত্ন করে প্রতিমাগুলো তৈরি করা হয়েছে। যা সামনা সামনি দেখলে বোঝা যায়। নাটোর যেমন কাঁচাগোল্লার জন্য বিখ্যাত তেমনি এই ধানের প্রতিমা দিয়ে নতুন করে বিখ্যাত পরিচয় পেল। 

পরিতোষ নামে আরেক দর্শনার্থী বলেন, ইন্ডিয়াতেও অনেক জায়গায় পূজা দেখেছি, কিন্তু এতো সুন্দর প্রতিমা দেখিনি। এটার কাজ সত্যিই অসাধারণ হয়েছে। ধানের তৈরি প্রতিমা দেখে আমি মুগ্ধ। 

রবি সুতম সংঘের সাধারণ সম্পাদক পার্থ রায় জানান, রবি সুতম সংঘ প্রতি বছরই নিত্যনতুন দুর্গাপ্রতিমা দিয়ে পূজা উদযাপন করে। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছরে আমরা ধান দিয়ে প্রতিমা তৈরির পরিকল্পনা করি। আমরা প্রতিমাশিল্পী বিশ্বজিৎ পালের সঙ্গে আলোচনা করলে তিনি এই প্রতিমা তৈরি করে দিতে সম্মতি দেন। ধান দিয়ে প্রতিমা নির্মাণ করাটা খুব সহজ কাজ নয়। প্রতিমাশিল্পী একটি করে ধান সুনিপুণভাবে থরে থরে সাজিয়ে প্রতিমাকে সুন্দর করে তুলেছেন।

পূজা উদযাপন নিয়ে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. মাছুদুর রহমান বলেন, একযোগে নাটোরের ৩৫০টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। উৎসবটি উপলক্ষ্যে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য ও হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে পূজা উদযাপন উপলক্ষ্যে জেলা পর্যায়ে প্রস্তুতিমূলক মিটিং সম্পন্ন হয়েছে। সেখানে শারদীয় দুর্গোৎসব নির্বিঘ্নে করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সুত্র:ঢাকা পোস্ট।

ট্যাগ:

সারাদেশে সাদপন্থীদের কার্যক্রম বন্ধ এবং বিচারের দাবীতে ওলামা মাশায়েখদের সংবাদ সম্মেলন

ভক্ত-দর্শনার্থীদের নজর কাড়ছে ধানের প্রতিমা

প্রকাশঃ 02:28:15 pm, Tuesday, 8 October 2024

পূজা উদযাপনে দেবী দুর্গার প্রতি ভক্তি আকর্ষণের পাশাপাশি দর্শনার্থীদের দৃষ্টি কাড়তেই ব্যতিক্রমী প্রতিমা তৈরিসহ নানা উদ্যোগ নেন আয়োজকরা। এবার তেমনি ৫০ কেজি ধান দিয়ে প্রতিমা তৈরি করে আলোচনায় এসেছেন এক কারিগর। একেকটি সোনালী ধান দিয়ে শিল্পীর সুনিপুণ হাতে তৈরি নাটোরের দেবী দুর্গার ব্যতিক্রম, অপূর্ব সুন্দর প্রতিমা নজর কাড়ছে সবার। খুব কষ্টের হলেও এমন প্রতিমা তৈরি করতে পেরে খুশি প্রতিমা শিল্পীরা। নজরকাড়া এই প্রতিমা দেখে খুশি ভক্ত ও দর্শনার্থীরা।

নাটোর শহরের লালবাজার এলাকার বিশ্বজিৎ পাল ও তার পরিবারের সদস্যরা  ধান দিয়ে এই প্রতিমা তৈরি করে রীতিমত সাড়া ফেলে দিয়েছেন। প্রতিমাটি সম্পূর্ণ তৈরি করতে ৩৫ দিনের মতো সময় লেগেছে বলে জানান বিশ্বজিৎ পাল।  দুর্গাসহ ৮টি প্রতিমা তৈরি করতে মোট ধান লেগেছে ৫০ কেজি। প্রতিমাটি ৯৫ হাজার টাকায় ক্রয় করেছেন শহরের কদমতলী এলাকার রবি সুতম সংঘ।

প্রতিমা তৈরির কারিগর  (প্রতিমা শিল্পী) বিশ্বজিৎ পাল বলেন, বাঁশ, কাঠের ফ্রেমে খড় সাজিয়ে মাটি বসিয়ে প্রতিমা নরম থাকতেই বিশেষ কায়দায় একটি একটি সোনালী ধান বসানো হয়েছে। বিশেষ করে প্রতিমার মুখের দিকে খুব যত্ন করে ধান বসাতে হয়েছে। প্রতিমাগুলোতে ৫০ কেজি ধান ব্যবহার করা হয়েছে। শুরু থেকে প্রতিমার কাজ শেষ করতে ৩৫ দিনের মতো সময় লেগেছে।

তিনি আরও বলেন, ব্যতিক্রমধর্মী এটাই আমার প্রথম কাজ। ইতোমধ্যে মিডিয়ার কল্যাণে দেশ ছাপিয়ে বিদেশেও ধান দিয়ে প্রতিমা তৈরির খবর পৌঁছে গেছে। সবাই খুব পছন্দ করছে এবং যারা দেখতে আসছে তারা প্রশংসা করছে। এটাই আমার প্রাপ্তি। সকলের প্রশংসা সামনে এ ধরনের কাজ করতে আমাকে অনুপ্রাণিত করবে।

ব্যতিক্রমী ধানের তৈরি প্রতিমা দেখতে আসা শিলা দত্ত বলেন, আমার জানা মতে বাংলাদেশে নাটোরেই প্রথম ধান দিয়ে তৈরি হলো প্রতিমা। খুবই যত্ন করে প্রতিমাগুলো তৈরি করা হয়েছে। যা সামনা সামনি দেখলে বোঝা যায়। নাটোর যেমন কাঁচাগোল্লার জন্য বিখ্যাত তেমনি এই ধানের প্রতিমা দিয়ে নতুন করে বিখ্যাত পরিচয় পেল। 

পরিতোষ নামে আরেক দর্শনার্থী বলেন, ইন্ডিয়াতেও অনেক জায়গায় পূজা দেখেছি, কিন্তু এতো সুন্দর প্রতিমা দেখিনি। এটার কাজ সত্যিই অসাধারণ হয়েছে। ধানের তৈরি প্রতিমা দেখে আমি মুগ্ধ। 

রবি সুতম সংঘের সাধারণ সম্পাদক পার্থ রায় জানান, রবি সুতম সংঘ প্রতি বছরই নিত্যনতুন দুর্গাপ্রতিমা দিয়ে পূজা উদযাপন করে। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছরে আমরা ধান দিয়ে প্রতিমা তৈরির পরিকল্পনা করি। আমরা প্রতিমাশিল্পী বিশ্বজিৎ পালের সঙ্গে আলোচনা করলে তিনি এই প্রতিমা তৈরি করে দিতে সম্মতি দেন। ধান দিয়ে প্রতিমা নির্মাণ করাটা খুব সহজ কাজ নয়। প্রতিমাশিল্পী একটি করে ধান সুনিপুণভাবে থরে থরে সাজিয়ে প্রতিমাকে সুন্দর করে তুলেছেন।

পূজা উদযাপন নিয়ে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. মাছুদুর রহমান বলেন, একযোগে নাটোরের ৩৫০টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। উৎসবটি উপলক্ষ্যে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য ও হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে পূজা উদযাপন উপলক্ষ্যে জেলা পর্যায়ে প্রস্তুতিমূলক মিটিং সম্পন্ন হয়েছে। সেখানে শারদীয় দুর্গোৎসব নির্বিঘ্নে করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সুত্র:ঢাকা পোস্ট।