শনি. সেপ্টে ২১, ২০২৪

পাঙাশ মাছ কি সত্যিই শরীরের জন্য ক্ষতিকর, যা বলছেন পুষ্টিবিদ

স্বাস্থ্য ডেস্ক: প্রোটিনের উৎস্যগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি উপাদান মাছ। দৈনন্দিন প্রোটিনের চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে খাদ্যতালিকায় মাছ রাখার কথা বলা হয়। এতে প্রোটিন ছাড়াও শরীরর জন্য প্রয়োজনীয় ও উপকারী বিভিন্ন উপাদান বিদ্যমান। এ জন্য মাছ খাওয়ার কথা বলো হলে প্রথমেই উঠে আসে সহজলভ্য পাঙাশের নাম।

স্বল্প দামে পাওয়া যাওয়ায় প্রায় সব পরিবারই খুব সহজেই এই মাছ খেতে পারেন। বাড়ির ছোট থেকে শুরু করে বয়স্ক মানুষরাও ভীষণ পছন্দ করেন পাঙাশ মাছ। কিন্তু অনেকেই চর্বি বেশি থাকার জন্য পছন্দ করেন না এই মাছ। কেউ কেউ আবার বলেন যে, পাঙাশে পুষ্টিগুণও কম। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আসলেই কি পাঙাশে পুষ্টিগুণ কম থাকে? সম্প্রতি এ ব্যাপারে দেশের একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন রাজধানীর হলিক্রস মেডিকেল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পুষ্টিবিদ মাহিনুর ফেরদৌস।

এ পুষ্টিবিদ জানিয়েছেন, পাঙাশ খুবই পুষ্টিকর খাদ্য। যা আমাদের দেশের বিভিন্ন নদীতে পাওয়া যায়। আবার পুকুরেও চাষ করা হয়। নদীতে পাওয়া  বা সঠিকভাবে চাষ করা পাঙাশ মাছ খাওয়ার ফলে অনেক স্বাস্থ্য উপকার মিলে।

পুষ্টি উপাদান: পাঙাশে বিদ্যমান প্রোটিন অনেক উন্নত মানের। মাছটিতে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান অ্যামাইনো এসিডের পরিমাণ বেশি থাকে। ফলে পাঙাশে থাকা আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, ক্যালসিয়াম, ওমেগা থ্রি ও ফসফরাস উপাদান স্বাস্থ্যের হাল ফেরাতে কার্যকর ক্ষমতা রাখে।

পাঙাশ মাছের উপকারিতা: নিয়মিত পাঙাশ খাওয়ার ফলে কার্ডিওভাস্কুলার রোগ প্রতিরোধ হয়। ফলে হার্টের বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকি কমায়। শরীর গঠনের জন্য উন্নত মানের প্রোটিনও রয়েছে। প্রোটিনের চাহিদা পূরণে পাঙাশ খেতে পারেন। আবার এতে কোলেস্টেরলের মাত্রা কম। আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে, যা শরীরে থাকা খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে সহায়তা করে। এ জন্য যাদের কোলেস্টেরল হাই, তারা খাদ্যতালিকায় পাঙাশ রাখতে পারেন।

এ মাছ খাওয়ার ফলে পেশি শক্তিশালী হয়। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। বিভিন্ন ধরনের ক্যালসিয়াম থাকায় এই ঘাটতিও পূরণ হয়। ফলে হাড় ও দাঁত মজবুত করে তোলে। অন্তঃসত্ত্বা নারীর ভ্রুণের স্বাস্থ্য ও এর বৃদ্ধিতেও উপকারী পাঙাশ মাছ। এতে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড  ভ্রুণের বৃদ্ধিতে সহায়তা করা ছাড়াও মস্তিষ্ক ভালো রাখতে ভূমিকা রাখে।

কখন ক্ষতিকর পাঙাশ মাছ: এখন অনেকেই কৃত্রিমভাবে পুকুরে চাষ করেন পাঙাশ মাছ। এতে পুকুরে যেসব খাবার দেয়া হয়, সেসব খাবারের জন্য পাঙাশ মাছ আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। অনেকেই আবার মাছ দীর্ঘক্ষণ ভালো রাখতে প্রিজারভেটিভস, রাসায়নিক বা কীটনাশকসহ বিভিন্ন মেডিসিন ব্যবহার করেন। যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। আর পাঙাশে অন্য মাছের তুলনায় প্রিজারভেটিভস বেশি ব্যবহার হওয়ায় শরীরের জন্য হুমকির কারণ হতে পারে। এছাড়া যদি রান্নার পদ্ধতি ভালো বা স্বাস্থ্যসম্মত না হয়, তাহলেও উপকারের বিপরীতে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

By admin

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *