শনি. সেপ্টে ২১, ২০২৪

নেপালকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

দৃষ্টিনন্দন ফ্রি কিকে দলকে এগিয়ে নিলেন মিরাজুল ইসলাম। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে সুযোগসন্ধানী হেডে এই ফরোয়ার্ড ব্যবধান করলেন দ্বিগুণ। এরপর তিনিই সুর বেঁধে দিলেন সতীর্থের গোলে। স্বাগতিক নেপালকে উড়িয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা জয়ের উচ্ছ্বাসে ভাসল বাংলাদেশ।

নেপালের ললিতপুরের আনফা কমপ্লেক্সে বুধবার ৪-১ গোলে জিতেছে মারুফুল হকের দল। চ্যাম্পিয়নদের অন্য দুই গোলদাতা রাব্বী হোসেন রাহুল ও পিয়াস আহমেদ নোভা। বয়সভিত্তিক এই প্রতিযোগিতায় এই প্রথম চ্যাম্পিয়ন হলো বাংলাদেশ।

ফাইনালের জয়ে মধুর প্রতিশোধও নেওয়া হলো বাংলাদেশের। শ্রীলঙ্কাকে ২-০ গোলে হারিয়ে গ্রুপপর্ব শুরুর পর নেপালের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে হেরে গ্রুপ রানার্সআপ হয়েছিল তারা। ২০২২ সালে অনূর্ধ্ব-২০ ক্যাটগরির আসরে ভারতের বিপক্ষে হেরে রানার্সআপ হয়েছিল বাংলাদেশ। এবার সেমি-ফাইনালে তাদেরকে টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে হারিয়ে ফাইনালের মঞ্চে উঠে আসে বাড়তি আত্মবিশ্বাস নিয়ে। শুরুতে আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠে ম্যাচ; কিন্তু সময় গড়ানোর সাথে সাথে আধিপত্য বাড়তে থাকে নেপালের। অষ্টম মিনিটে প্রথম কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়েন সেমি-ফাইনালে টাইব্রেকারে ভারতের বিপক্ষে দুটি সেভ করা গোলরক্ষক আসিফ হোসেন।

বক্সের বেশ খানিকটা দূর থেকে নিরাজন ধামীর দুরপাল্লার শট অনেকটা লাফিয়ে আঙুলের টোকায় ক্রসবারের উপর দিয়ে বের করে দেন আসিফ। ষোড়শ মিনিটে সতীর্থেও থ্রু পাস অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে ধরে বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন সমীর তামাং, তবে রাজীব হোসেন ছুটে গিয়ে দারুণভাবে ক্লিয়ার করেন। গোলরক্ষককে একা পেয়েও শট নিতে পারেননি সমীর। ৩০তম মিনিটে নিরাজনের শট অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। ভুল পাসে নেপালের এই ফরোয়ার্ডের পায়ে বল তুলে দিয়েছিলেন এক ডিফেন্ডার।

প্রথমার্ধের শেষ দিকে মিরাজুলের ওই দৃষ্টিনন্দন গোলে বদলে যায় ম্যাচের দৃশ্যপট। বক্সের একটু ওপরে ফাউলের শিকার হন এই ফরোয়ার্ড, ফ্রি কিক পায় বাংলাদেশ। মিরাজুলের বুলেট গতির শট ঝাঁপিয়ে পড়া জয়রথ শিখের গ্লাভস ফাঁকি দিয়ে পোস্টের ভেতরের দিকে লেগে জালে লুটোপুটি খায়। এগিয়ে যাওয়ার আনন্দ নিয়ে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধে উজ্জীবিত ফুটবল খেলতে থাকে বাংলাদেশ। ৫৫তম মিনিটে মিলে যায় ব্যবধান দ্বিগুণ করা গোল। আসাদুল ইসলাম সাকিবের লং পাসে দূরের পোস্টে থাকা আসাদুল মোল্লার হেড পাস থেকে হেডেই লক্ষ্যভেদ করেন মিরাজুল। ম্যাচের ভাগ্য হেলে পড়ে বাংলাদেশের দিকে। ৭০তম মিনিটের গোলে বাংলাদেশের জয় অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায়।

বক্সের ভেতর থেকে মিরাজুলের ছোট পাস ধরে জায়গা বানিয়ে ডান পায়ের বাঁকানো শটে লক্ষ্যভেদ করেন রাব্বী হোসেন রাহুল। ১০ মিনিট পর বক্সে আসা লং ক্রসে রাজীব লাফিয়ে হেড করলেও পুরোপুরি ক্লিয়ার করতে পারেননি। সমীরের হেডে ঘুরে দাঁড়ানোর উপলক্ষ পায় নেপাল। কিন্তু পরে নির্ধারিত সময় শেষে, ১০ মিনিটের যোগ করা সময়েও তারা আর খুঁজে পায়নি পথ। বরং যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে রাব্বীর আড়াআড়ি পাসে নোভার শট গোলরক্ষককে ফাঁকি দেওয়ার পর এক ডিফেন্ডার ক্লিয়ার করেন, কিন্তু তার আগেই বল পেরিয়ে যায় গোললাইন। নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের জয়।

By admin

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *