কাজের মেয়ের মতো বলে কটাক্ষ, ভাবনাকে আরও যা বলেছিলেন আরেক অভিনেত্রী

ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী আশনা হাবীব ভাবনা। তিন বছর আগে একটি সিনেমায় নাম লেখান। ছোটপর্দায় দুর্দান্ত অভিনয় করেন। তবে বড়পর্দায় একটি সিনেমায় যুক্ত হওয়ার সময় বর্ণবৈষম্য নিয়ে কথা শুনতে হয়েছিল তাকে। সেটিও আবার একজন অভিনেত্রীর কাছ থেকে। যা ছিল অভিনেত্রী ভাবনা ও তার মায়ের সম্পর্কে।

এই অভিনেত্রীকে ওই সময় শুনতে হয়েছিল, কীভাবে চিত্রনায়িকা হয় সে? তাকে ও তার মাকে দেখতে নাকি অনেকটাই কাজের মেয়ের মতো লাগে। সহকর্মী অভিনেত্রীর কাছ থেকে এমন কথা শুনে রীতিমত বাকরুদ্ধ হয়েছিলেন ভাবনা। কেননা, ওই সহকর্মীর সঙ্গে প্রায়ই দেখা হয়, আড্ডা হয়। অর্থাৎ, খুবই সুসম্পর্ক ছিল তাদের।

এ ব্যাপারে দেশের একটি সংবাদমাধ্যমকে ভাবনা বলেন, আমার শোবিজ অঙ্গনের কাছের একজন মানুষ আমাকে নিয়ে এমন কথা বলবে, সেটি কখনো কল্পনাই করিনি আমি। তার উদ্দেশ্য ছিল আমাকে সরাসরি অপমান বা ছোট করা। তবে তার ওই অপমান, ছোট করার চেষ্টাগুলোই শক্তি জুগিয়েছে আমায়। এমন অনেকেই আছে যারা সহ্য করতে পারে না যে―কেন একের পর এক নায়িকা হচ্ছি। কিন্তু যতই ছোট করা হোক না কেন আমায়, আমি কখনোই পেছনে ফিরে তাকাইনি। নিজের যোগ্যতার মাধ্যমে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য চিন্তা করেছি সবসময়।

‘ভয়ংকর সুন্দর’ সিনেমার এ নায়িকা জানান, তাকে ও তার মায়ের সম্পর্কে ওই অভিনেত্রী বলেছিলেন, ভাবনা কী করে নায়িকা হয়? ওর চেহারা তো ওর মায়ের মতো। আর ওর মা তো দেখতে আমাদের বাসার কাজের মেয়ে রহিমার মতো।

ভাবনা বলেন, আমাকে নিয়ে কেউ একটা মন্তব্য করতেই পারে। কিন্ত আমার মাকে টেনে এনে কেন অপমান করা। আমি চাইলে সেদিন তাকে ওই কথার জবাব দিতে পারতাম; দেইনি। আমার মা-বাবা সেই শিক্ষা দেননি আমাকে। কাউকে ছোট করে কখনো বড় হওয়া যায় না। আমাদের সহকর্মীদের মধ্যেই অনেকে আছেন, যারা অন্যদের টেনে নিচে নামাতে চান।

তবে ভাবনা সেই অভিনেত্রীর নাম জানাননি। নাম প্রকাশ করে তাকে ছোট করতে চাননি। ওই অভিনেত্রী একজন শিক্ষিত সংস্কৃতিমনা সহকর্মী। তাকে কখনোই ছোট করতে চান না ভাবনা।

ভাবনা বলেন, এখনো কিন্তু আমরা কথা বলি, কখনো আবার আড্ডা দেই। তার নাম প্রকাশ করে ছোট করার কী প্রয়োজন। সে তার নিজের মতো থাক। আমাকে ও মাকে যারা ছোট করেছিলেন, আমি তাদের অন্যভাবে জবাব দেয়ার চেষ্টা করেছি। আমাকে যেদিন অপমান করা হয়, ওই দিনই মাথায় আসে ‘কাজের মেয়ে’ নামে একটি বই লিখব আমি। যে মেয়েটি অনেক কাজের ও পরিশ্রমী। সেই বইটি এবার প্রকাশ হয়েছে বইমেলায়। আর শেষ দিন মনে হলো পেছনের ঘটনা সবাইকে জানানো দরকার।

এ অভিনেত্রীর ভাষ্য―একজন কাজের মেয়ে কি মানুষ নয়? তাকে ছোট করা কি একজন শিল্পীর মানায়? ভাবনা বলেন, একজন শিল্পী কি কখনো কোনো মানুষকে ছোট করতে পারে? আমি দেখতে হয়তো কাজের মেয়ের মতো হতে পারি। এতে সমস্যা কী? কাজের মেয়ে মানুষ নয় নাকি। আমরা দিন শেষে কাজের মানুষ হতে চাই। একজন শিল্পী হিসেবে আমি আমার দায়িত্ব বলে মনে করি, সমাজের অসংগতিগুলো শিল্পের মাধ্যমে উপস্থাপন করা, প্রশ্ন তোলা। কেননা, বোধহীন শিল্পী হতে চাই না আমি।

ট্যাগ:
জনপ্রিয় পোস্ট

ধারাবাহিক পর্বের প্রথম পর্ব – সাবেক সাংসদের আস্থাভাজন কে এই রহিম মোল্লা এবার ডুকতে চায় বিএনপিতে

কাজের মেয়ের মতো বলে কটাক্ষ, ভাবনাকে আরও যা বলেছিলেন আরেক অভিনেত্রী

প্রকাশঃ 03:38:20 am, Monday, 4 March 2024

ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী আশনা হাবীব ভাবনা। তিন বছর আগে একটি সিনেমায় নাম লেখান। ছোটপর্দায় দুর্দান্ত অভিনয় করেন। তবে বড়পর্দায় একটি সিনেমায় যুক্ত হওয়ার সময় বর্ণবৈষম্য নিয়ে কথা শুনতে হয়েছিল তাকে। সেটিও আবার একজন অভিনেত্রীর কাছ থেকে। যা ছিল অভিনেত্রী ভাবনা ও তার মায়ের সম্পর্কে।

এই অভিনেত্রীকে ওই সময় শুনতে হয়েছিল, কীভাবে চিত্রনায়িকা হয় সে? তাকে ও তার মাকে দেখতে নাকি অনেকটাই কাজের মেয়ের মতো লাগে। সহকর্মী অভিনেত্রীর কাছ থেকে এমন কথা শুনে রীতিমত বাকরুদ্ধ হয়েছিলেন ভাবনা। কেননা, ওই সহকর্মীর সঙ্গে প্রায়ই দেখা হয়, আড্ডা হয়। অর্থাৎ, খুবই সুসম্পর্ক ছিল তাদের।

এ ব্যাপারে দেশের একটি সংবাদমাধ্যমকে ভাবনা বলেন, আমার শোবিজ অঙ্গনের কাছের একজন মানুষ আমাকে নিয়ে এমন কথা বলবে, সেটি কখনো কল্পনাই করিনি আমি। তার উদ্দেশ্য ছিল আমাকে সরাসরি অপমান বা ছোট করা। তবে তার ওই অপমান, ছোট করার চেষ্টাগুলোই শক্তি জুগিয়েছে আমায়। এমন অনেকেই আছে যারা সহ্য করতে পারে না যে―কেন একের পর এক নায়িকা হচ্ছি। কিন্তু যতই ছোট করা হোক না কেন আমায়, আমি কখনোই পেছনে ফিরে তাকাইনি। নিজের যোগ্যতার মাধ্যমে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য চিন্তা করেছি সবসময়।

‘ভয়ংকর সুন্দর’ সিনেমার এ নায়িকা জানান, তাকে ও তার মায়ের সম্পর্কে ওই অভিনেত্রী বলেছিলেন, ভাবনা কী করে নায়িকা হয়? ওর চেহারা তো ওর মায়ের মতো। আর ওর মা তো দেখতে আমাদের বাসার কাজের মেয়ে রহিমার মতো।

ভাবনা বলেন, আমাকে নিয়ে কেউ একটা মন্তব্য করতেই পারে। কিন্ত আমার মাকে টেনে এনে কেন অপমান করা। আমি চাইলে সেদিন তাকে ওই কথার জবাব দিতে পারতাম; দেইনি। আমার মা-বাবা সেই শিক্ষা দেননি আমাকে। কাউকে ছোট করে কখনো বড় হওয়া যায় না। আমাদের সহকর্মীদের মধ্যেই অনেকে আছেন, যারা অন্যদের টেনে নিচে নামাতে চান।

তবে ভাবনা সেই অভিনেত্রীর নাম জানাননি। নাম প্রকাশ করে তাকে ছোট করতে চাননি। ওই অভিনেত্রী একজন শিক্ষিত সংস্কৃতিমনা সহকর্মী। তাকে কখনোই ছোট করতে চান না ভাবনা।

ভাবনা বলেন, এখনো কিন্তু আমরা কথা বলি, কখনো আবার আড্ডা দেই। তার নাম প্রকাশ করে ছোট করার কী প্রয়োজন। সে তার নিজের মতো থাক। আমাকে ও মাকে যারা ছোট করেছিলেন, আমি তাদের অন্যভাবে জবাব দেয়ার চেষ্টা করেছি। আমাকে যেদিন অপমান করা হয়, ওই দিনই মাথায় আসে ‘কাজের মেয়ে’ নামে একটি বই লিখব আমি। যে মেয়েটি অনেক কাজের ও পরিশ্রমী। সেই বইটি এবার প্রকাশ হয়েছে বইমেলায়। আর শেষ দিন মনে হলো পেছনের ঘটনা সবাইকে জানানো দরকার।

এ অভিনেত্রীর ভাষ্য―একজন কাজের মেয়ে কি মানুষ নয়? তাকে ছোট করা কি একজন শিল্পীর মানায়? ভাবনা বলেন, একজন শিল্পী কি কখনো কোনো মানুষকে ছোট করতে পারে? আমি দেখতে হয়তো কাজের মেয়ের মতো হতে পারি। এতে সমস্যা কী? কাজের মেয়ে মানুষ নয় নাকি। আমরা দিন শেষে কাজের মানুষ হতে চাই। একজন শিল্পী হিসেবে আমি আমার দায়িত্ব বলে মনে করি, সমাজের অসংগতিগুলো শিল্পের মাধ্যমে উপস্থাপন করা, প্রশ্ন তোলা। কেননা, বোধহীন শিল্পী হতে চাই না আমি।