নিজস্ব প্রতিনিধি: “তুমি কে আমি কে, সন্ত্রাসী সন্ত্রাসী” কে বলেছে কে বলেছে হেড স্যার হেড স্যার” এই শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার কাশিপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দেওভোগ হাজী উজির আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হুমায়ন কবির রতনের বিরুদ্ধে। স্কুল কেন্দ্রীক সকল প্রকার অনিয়ম, দূর্নীতি ও তার পদত্যাগ সহ ৬ দফা দাবিতে স্কুল প্রাঙ্গনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়।
মঙ্গলবার (১৩ আগষ্ট) দুপুর ১২ টায় সদর উপজেলার ফতুল্লার কাশিপুর ইউনিয়নের দেওভোগ হাজী উজির আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবিরের ছত্রছায়ায় অযোগ্য শিক্ষকদের নিয়োগ দেয়ায় নানা অনিয়মসহ শিক্ষা ব্যবস্থার মান দিন দিন কমছে। শিক্ষকরা ক্লাসে যথাযথ পাঠ দান না করে শিক্ষার্থীদের কোচিংয়ে ভর্তি হতে বাধ্য করা হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের আরও অভিযোগ, এছাড়াও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিতে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করায় বছর জুড়েই তারা নানা ইস্যুতে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করছেন। ফলে বিদ্যালয়টির কোন ধরনের উন্নয়ন হচ্ছে না। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ প্রায় এক যুগ ধরে সুশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টির সুনাম ও মানদণ্ড নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের।
তাই অবিলম্বে প্রধান শিক্ষক ও অযোগ্য শিক্ষকদের অপসারণ, পরিচালনা কমিটি থেকে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বহিষ্কার এবং কোচিং ব্যবস্থা বন্ধসহ ছয় দফা দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা। এসব দাবি সম্বলিত ব্যানার ফেস্টুন হাতে নিয়ে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মিছিলও করে তারা।
শিক্ষার্থীদের এই বিক্ষোভের মুখে প্রধান শিক্ষক ও সাধারণ শিক্ষকরাসহ পরিচালনা কমিটির কর্মকর্তারা বিদ্যালয় থেকে সটকে পড়েন।
শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবি গুলো হলো, প্রধান শিক্ষক হুমায়ন কবির স্যারের পদত্যাগ, স্কুল কমিটির সকল প্রকার রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের পদত্যাগ, স্কুলে নিজস্ব কোচিং বন্ধ করতে হবে, স্কুলে অযোগ্য শিক্ষকদের বর্জন করা হোক, স্কুলের বেতন ও সকল ধরনের ফি সিমিত আকারে ধার্য করা হোক, স্কুলের আয় ব্যায়ের হিসাব দিতে হবে।
সূত্র থেকে জানা যায়, বিগত সময়ে ৮৯/৯৯ সালের দিকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রধান শিক্ষক হুমায়ন কবির রতন স্কুলের কেরানীর পদে দায়িত্ব নেন। সেই সময় স্কুলের ফান্ডের টাকা চুরি হওয়ার ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার পর তদবির করে পূনরায় সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাইফ উল্লাহ বাদলের হাত পা ধরে প্রধান শিক্ষক হন। শুধু তাই নয় আওয়ামীলীগ সরকারের ১৫ বছরের শাসন আমলে প্রতি বছর নতুন বই পাঠ্য করার কথা বলে ১৬ লক্ষ টাকা অবৈধ ভাবে পাঠ্য করায়। স্কুলে কোচিং করতে বাধ্য করা হয়।
শিক্ষার্থীদের এসব অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে হাজী উজির আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবিরের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি সাড়া দেন নি।