শহরে মিছিল ও সমাবেশ করেছে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগসহ মহানগর যুবলীগ। রবিবার (০৪ আগষ্ট) সকালে শহরের ২নং রেলগেটস্থ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে পৃথকভাবে সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের এ সমাবেশ করতে দেখা গেছে।
মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে শহরে মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি আলী আহম্মদ চুনকা সিটি পাঠাগার থেকে শুরু হয়ে ২নং রেলগেট ও নারায়ণগঞ্জ ক্লাব এলাকা ঘুরে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্যদিয়ে শেষ হয়।
এসময় আনোয়ার হোসেন বলেন, বাংলাদেশকে আজ আফগানিস্তান বানানোর পাঁয়তারা চলছে। আপনারা জানেন দেশ স্বাধীন হওয়ার পাকিস্তান আজ কি অবস্থায় রয়েছে, আর বাংলাদেশ কোথায় রয়েছে। বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বের দরবারে উন্নতশীল জাতি হিসেবে ইতিমধ্যেই প্রতিষ্ঠা লাভ করছে। এসব উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডই হলো শেখ হাসিনার জন্য কাল্। আজ বিএনপি জামায়াত শিবিরা ষড়যন্ত্র করে বিভিন্নভাবে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে। এসময় আওয়ামী লীগ কর্মীরা বসে থাকতে পারেনা।
তিনি বলেন, সংঘর্ষ নয় আমরা শান্তি চাই। শান্তির মধ্যদিয়েই সকল সমস্যার সমাধান করতে চাই। আপনারা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকেন। সকল ভেদাভেদ আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে চাই। মনে রাখবেন, শেখ হাসিনা বাঁচলে আমরা বাঁচবো, দেশ বাঁচবে।
এরআগে শহরে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করেন মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আহাম্মদ আলী রেজা উজ্জল। এসময় তার সাথে অসংখ্য যুবলীগের নেতাকর্মী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সাংসদ অ্যাডভোকেট হোসনে আরা বাবলি।
এসময় এক প্রতিক্রিয়ায় অ্যাডভোকেট হোসনে আরা বাবলি বলেন, আমাদের এ মাসেই কিন্তু জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছিলো। তারা এ মাসটিকেই টার্গেট করেই তারা সেদিন (২১ আগস্ট) শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিলো। আমাদের বহু নেতা সেদিন মারা গিয়েছিলো। এবারও তারা মাঠে নেমেছে।
তিনি বলেন, ছাত্ররা আন্দোলন করছে এ ব্যাপারে আমাদের কোন কথা নেই। ছাত্রদের সব দাবি সরকার মেনে নিয়েছে। তারপরও জামায়াতে মদদে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড দিয়ে সারাদেশকে ম্যাসাকার করে দিচ্ছে। ছাত্রদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে তারা সারাদেশে তান্ডবলীলা চালাচ্ছে। এর তান্ডবলীলার একটা বিচার হতে হবে। নয়তো যে কেউ এ ধরনের তান্ডবলীলায় জড়াবে। তার তীব্র নিন্দা আমরা জানাচ্ছি এবং ছাত্রদের প্রতি আহŸান জানাবো, তোমরা ঘরে ফিরে যাও, পড়াশোনায় মনযোগ দাও। তোমাদের ব্যবহার করে বিএনপি জামায়াত ফায়দা লুটছে, এইটুকু অন্তত বুঝার চেষ্টা করো।
ছাত্রদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে যুবলীগ নেতা উজ্জল বলেন, আপনাদের যে অভিযোগ যে শর্ত সরকার সব মেনে নিয়েছে। তবে কেন, কার স্বার্থে আপনারা মাঠে নেমে জনগণের যানমালের ক্ষতি করছেন। আপনাদের প্রতি অনুরোধ, দয়া করে আপনারা বাসায় চলে যান, এদেশটাকে বাঁচান।
তিনি বলেন, যারা পিছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে, তারাতো আপনাদের পাশে থাকবেনা। দয়া করে এ ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করুন। আমরা যুবকরা আপনাদের কাছে আবারও অনুরোধ করছি, আপনারা ঘরে ফিরে যান, দেশের মানুষ শান্তি দেন।
এরপর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাতের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি মিছিল বের করা হয়।
মিছিল শেষে আনিসুর রহমান দিপু বলেন, আপনারা জানেন ছাত্রদের আর কোন দাবি নাই। সব আমাদের রাষ্ট্রনায়ক জননেত্রী শেখ হাসিনা মেনে নিয়েছেন। তারপরও নেত্রী বলেছেন, ছাত্রদের জন্য যেকোন সময় গণভবনের দরজা খোলা। আরও যদি কথাবার্তা থাকে, নেত্রী তাদের সাথে কথা বলবেন। কিন্তু আজকে আপনারা দেখেন সারাদেশে যে ধ্বংসযজ্ঞ হচ্ছে, সেখানে কোন ছাত্র নাই। ছাত্রদের কাঁধে ভর করে জামায়াত শিবির এদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিনত করতে চায়। তারা বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা করছে, আজকেও অনেক স্থাপনায় হামলা করছে। আমরা নারায়ণগঞ্জের শান্তিকামি মানুষদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, যারা দেশের ধনসম্পদ ধ্বংস করছে, আমাদের অর্জনগুলোকে ধ্বংস করছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।
জিএম আরাফাত বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচি হিসেবে আমরা আমাদের এই দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান করছি। কোটা আন্দোলনের যে বিষয়টা, সেটা আদালতের মাধ্যমে নির্নয় হয়েছে। আমরা আশাকরছি, ছাত্ররা ঘরে ফিরে যাবে এবং একই সাথে তারা পাঠদান শুরু করবে।
বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেখানে বলেছেন, তাদের জন্য আমাদের দরজা খোলা। কিন্তু তারা সেটা অবহেলা করছে। পরিতাপের বিষয় আজকের শিক্ষার্থীরা সেটা বুঝে উঠতে পারছে না। তারা ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পাঁ দিয়েছে, সেই ফাঁদে পাঁ দিয়ে তারা একটি পক্ষ হয়ে কাজ করছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ যদি মাঠে নামে কোথাও কাউকে পাওয়া যাবেনা। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে সম্মান করি। কিন্তু সারাদেশে যদি এমন ধ্বংসযজ্ঞ চলে তাহলে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বসে থাকবে না। প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রতিটি ইউনিটে তারা অবস্থান করবে। ইনশাআল্লাহ্ শেখ হাসিনার জয় হবে।