নারায়ণগঞ্জে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলাবািহনীর সংঘর্ষ, যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও পুলিশের উপর হামলার অভিযোগ এনে জেলার ৫টি থানায় ৮টি মামলা দায়ের হয়েছে। এরমধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে নাশকতার অভিযোগে ৬টি এবং নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপপরিচালক মাহমুদুর রহমান ও নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার ওবায়েদ বাদী হয়ে দুটি মামলা দায়ের করেন। ৮ টি মামলায় কয়েক হাজার ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। তবে আসামির তালিকায় নারায়ণগঞ্জ জেলা, মহানগর, থানা ও ওয়ার্ড বিএনপির নেতাকর্মী রয়েছেন।
সোমবার (২২ জুলাই) রাতে মামলাগুলো দায়ের করা হয়। এরমধ্যে ফতুল্লা মডেল থানায় ৩টি, নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় ২টি এবং সিদ্ধিরগঞ্জ, বন্দর ও সোনারগাঁও থানায় একটি করে মামলা।
নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করায় ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ এনে মামলাটি করা হয়। মামলায় ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগে ৩ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলায়ও ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
অন্যদিকে পুলিশের ৬টি মামলায় নারায়ণগঞ্জ জেলা, মহানগর, থানা ও ওয়ার্ড বিএনপির অনেক নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে এবং সহস্রাধিক ব্যক্তিকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। সবমিলিয়ে ৮টি মামলায় প্রায় ৭ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে।
এদিকে সোমবার রাতে চিরনি অভিযান চালিয়ে ৭৪ জনকে আটক করে পুলিশ। এরমধ্যে নারায়ণগঞ্জ সদরে ১১, ফতুল্লায় ১০, সিদ্ধিরগঞ্জে ১২, সোনারগাঁয়ে ১১, আড়াইহাজারে ৮, রুপগঞ্জে ৭ ও বন্দরে ১৫ জন। পরে তাদের দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মঙ্গলবার আদালতে পাঠায় পুলিশ। এরআগে রোববার রাতে ১১৬ জনকে আটক করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াতের নাশকতার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ৬ টি এবং নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ও নারায়ণগঞ্জ ফায়ার স্টেশন থেকে ২টি মামলা করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে আরও ৭৪ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, যৌথ বাহিনীর পাশাপাশি পুলিশের ১৪২টি পেট্টোল টীম সক্রিয় রয়েছে। টিমগুলো নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা মহাসড়কের চাষাড়া থেকে সাইনবোর্ড, ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড থেকে মেঘনা টোল প্লাজা, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাঁচপুর থেকে আড়াইহাজারের পাচরুখি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করছে। এছাড়া জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে পুলিশের বাড়তি নজরদারি রয়েছে।
তিনি জানান, ঢাকা-চট্রগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বেড়েছে।