লেবাননকে ঘিরে বাড়ছে উত্তেজনা। দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের উত্তেজনা এখন চরমে। এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলকে উদ্দেশ্য করে যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান। তেল আবিবকে সতর্ক করে শনিবার (২৯ জুন) ইরান বলেছে, ইসরায়েল যদি লেবাননে আক্রমণ করে তবে ইরান ও এর আঞ্চলিক মিত্রদের গ্রুপ ‘অল রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টস’ (সব প্রতিরোধ ফ্রন্ট) তার (ইসরায়েল) সঙ্গে লড়াইয়ে নামবে।
এমন পরিস্থিতিতে অন্তত ৭টি দেশ তাদের নাগরিকদের লেবানন ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। এর মধ্যে লেবাননে অবস্থানরত সৌদি নাগরিকদের অবিলম্বে দেশটি ছাড়তে বলা হয়েছে। বার্তাসংস্থা আনাদুলু বলছে, সাতটি দেশ তাদের নাগরিকদের লেবানন ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছে। এ ছাড়া আরও পাঁচটি দেশ তাদের নাগরিকদের লেবাননে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছে।
শনিবার (২৯ জুন) বৈরুতের সৌদি দূতাবাস লেবাননে অবস্থানরত তার নাগরিকদের ‘অবিলম্বে লেবানিজ ভূখণ্ড ত্যাগ করার’ আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি ‘যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতে তাদের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার’ প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে। এর আগে শুক্রবার (২৮ জুন) অত্যন্ত অস্থিতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে অস্ট্রেলিয়া তার নাগরিকদের লেবাননে ভ্রমণ না করতে ‘দৃঢ়ভাবে পরামর্শ’ দিয়েছে। অস্ট্রেলীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং লেবাননে অবস্থানরত অস্ট্রেলিয়ানদের অবিলম্বে দেশটি ছেড়ে চলে যাওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে এক্সে করা এক পোস্টে ডাচ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিজ দেশের নাগরিকদের লেবাননে ভ্রমণে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। একইসঙ্গে যারা সেখানে বসবাস করেন তাদের বাণিজ্যিক ফ্লাইট চালু থাকা অবস্থায়ই দেশটি ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও একটি ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে এবং লেবাননে অবস্থানরত তার নাগরিকদের দেশটি ছেড়ে চলে যেতে বলেছে। জার্মানি জোর দিয়ে বলেছে, ‘ইসরায়েল ও লেবাননের সীমান্তে পরিস্থিতি খুবই উত্তেজনাপূর্ণ।’
অন্যদিকে কানাডিয়ান সরকারও লেবাননে তার নাগরিকদের লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যে দেশটি ছেড়ে চলে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘দেশে এবং বিদেশে কানাডিয়ানদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষাই কানাডার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’ এ ছাড়া নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে উত্তর মেসিডোনিয়াও তাদের নাগরিকদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেশটি ছেড়ে চলে যেতে বলেছে। আর গেল ২২ জুন কুয়েত তার নাগরিকদের লেবাননে ভ্রমণ এড়াতে এবং ‘আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে’ দেশটির অভ্যন্তরে থাকা ব্যক্তিদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে।
এ ছাড়া ইসরায়েল ও সিরিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় ভ্রমণ করা এড়িয়ে চলতে নির্দেশনা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, আয়ারল্যান্ড এবং জর্ডান।