শনি. সেপ্টে ২১, ২০২৪

চাঁদের দখল নিতে হুলস্থূল, আসল মালিক কে?

ডেস্ক রিপোর্ট: চলতি সপ্তাহে চাঁদের বুকে ওড়ানো চীনা পতাকার ছবি প্রকাশ পেয়েছে। গেল এক বছরে চাঁদের মাটিতে পা রেখেছে ভারত ও জাপানের মহাকাশযান। এদিকে, ফেব্রুয়ারিতে আমেরিকান কোম্পানি ‘ইনটুইটিভ মেশিনস’ চাঁদে ল্যান্ডার স্থাপনের ক্ষেত্রে প্রথম বেসরকারি কোম্পানি হয়ে ওঠে। এই তালিকায় প্রবেশ করার অপেক্ষায় আছে আরও বহু কোম্পানি।

২০২৬ সালের মধ্যে চাঁদে মানুষ অবতরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। পাশাপাশি ২০৩০ সালের মধ্যে চাঁদে মানুষ পাঠাতে চায় চীন, তবে ক্ষণস্থায়ী সফরের পরিবর্তে চাঁদে স্থায়ী ঘাঁটি তৈরির পরিকল্পনা করছে দেশটি। এমন তথ্য দেয় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। এমন পরিস্থিতিতে চাঁদকে কেন্দ্র করে পৃথিবীর আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক প্রভাবিত হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা।

১৯৬৭ সালে জাতিসংঘের একটি চুক্তিতে বলা হয়েছে যে কোনো জাতি চাঁদের মালিক হতে পারে না। মূলত স্নায়ুযুদ্ধের সময় মহাকাশও আমেরিকা ও রাশিয়ার একটি যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দেয়। ফলে চুক্তির মূল অংশজুড়ে ছিল কোনো পারমাণবিক অস্ত্র মহাকাশে পাঠানো যাবে না। এতে ১০০টিরও বেশি দেশ সই করে সম্মতি জানায়।

বর্তমানে চাঁদে অভিযান চালানো আর জাতীয় প্রকল্পের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, বরং এটি কোম্পানিগুলোর জন্যও একটি প্রতিযোগিতার খাতে পরিণত হয়েছে। জানুয়ারিতে, পেরেগ্রিন নামে একটি মার্কিন বাণিজ্যিক মিশন ঘোষণা দিয়েছিল যে তারা চাঁদে মানুষের ছাই, ডিএনএ-এর নমুনা এবং ব্র্যান্ডিংসহ একটি স্পোর্টস ড্রিংক নিয়ে যাবে। মহাকাশবিষয়ক আইনজীবী এবং ফর অল মুনকাইন্ডের প্রতিষ্ঠাতা মিশেল হ্যানলন জানান, এখন চাঁদ মানুষের নাগালের মধ্যে চলে আসছে এবং অপব্যবহার শুরু হয়েছে।

কোনো দেশ মহাকাশ শিল্পে সফল হতে পারলে তাদের অর্থনীতিতে উদ্দীপনা দেখা দেয়। কেননা এর ফলে উদ্ভাবন ও চাকরির বাজার তৈরি হয়। চাঁদে রয়েছে বিরল জাতের মাটি, লোহা, টাইটানিয়ামের মতো ধাতু এবং হিলিয়াম রয়েছে, যা সুপারকন্ডাক্টার থেকে চিকিৎসা সরঞ্জাম পর্যন্ত সবকিছুতে ব্যবহৃত হয়। এসব সম্পদের মূল্য আনুমানিক শত শত কোটি ডলার থেকে লাখ লাখ কোটি ডলারের মতো।

১৯৭৯ সালে, একটি আন্তর্জাতিক চুক্তিতে ঘোষণা করা হয়েছিল যে কোনো রাষ্ট্র বা সংস্থা চাঁদের সম্পদের মালিকানা দাবি করতে পারবে না। কিন্তু এই ঘোষণা তেমন জনপ্রিয় হয়নি- শুধু ১৭টি দেশ এতে অংশ নেয়। উল্টো যুক্তরাষ্ট্র ২০১৫ সালে একটি আইন পাস করে যেখানে তারা তাদের নাগরিক এবং শিল্পকে যে কোনো মহাকাশ সামগ্রী নিষ্কাশন, ব্যবহার এবং বিক্রি করার অনুমতি দিয়েছে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, যারাই প্রথমে চাঁদে ঘাঁটি স্থাপন করবে তারাই চাঁদের কর্তৃত্ব নিয়ে নেবে এবং ধীরে ধীরে তা প্রতিষ্ঠা করবে।

By admin

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *