রানার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ মঞ্চে ডাকা হয়নি ত্যাগীদের, দেয়া হয়নি সংবর্ধণা ও বক্তব্যের সুযোগ

নিজস্ব প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ত্যাগী নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মূলত অনুষ্ঠানটি কারানির্যাতিত অর্থ্যাৎ ত্যাগী নেতাকর্মীদের সংবর্ধনার অনুষ্ঠান হলেও এতে চরমভাবে অবমূল্যায়িত করা হয়েছে ত্যাগীদেরই। বুধবার (০৫ জুন) দুপুরে শহরের মিশনপাড়াস্থ হোসিয়ারী সমিতির কমিউনিটি সেন্টারে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এসএম জিলানীসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর বিএনপি শীর্ষ নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন। মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাখাওয়াত ইসলাম রানার সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মসিনুর রহমান বাবুর সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে এ অনুষ্ঠানে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক ও বর্তমান কমিটির অনেক ত্যাগী নেতাদের দাওয়াত দেয়া হয়নি। দাওয়াত না পেয়েও যারা উপস্থিত ছিলেন তাদেরকে ডাকা হয়নি মঞ্চে। শুধু তাই নয়, তাদেরকে কোন ধরনের বক্তব্য দেওয়ারও সুযোগ দেয়া হয়নি। অনুষ্ঠানে যেসব নেতাকর্মীদের সংবর্ধিত করা হয়েছে, ওই সময়ও পদের বাইরে থাকা ত্যাগী নেতাদের ডাকা হয়নি, দেয়া হয়নি সংবর্ধণা। আবার সংবর্ধিত নেতাদের মধ্যে এমন কয়েকজন আছেন, যারা কখনো কারানির্যাতি হন নি। শুধুমাত্র নিজেদের স্বেচ্ছাচারীতার কারনে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাখাওয়াত ইসলাম রানা এমনটা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, অনুষ্ঠানে সভামঞ্চের বাইরে অর্থ্যাৎ দর্শকসারিতে ছিলেন মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়াসহ সাবেক কমিটির আরও অনেকে। অথচ দল করতে গিয়ে একাধিকবার কারানির্যাতনসহ ডজন ডজন মামলা খেতে হয়েছে জিয়াকে। ওইসব মামলায় সপ্তাহে ৭ দিনের মধ্য ৫দিনই আদালতে হাজিরা দিতে দেখা যায় জিয়াকে। তবুও এত মামলা মাথায় নিয়ে দলের কাজ করে যাচ্ছেন জিয়া। এত কিছু করেও ত্যাগীদের তালিকায় জিয়ার নাম না থাকায় ক্ষুব্দ হয়েছেন অনেক নেতাকর্মী।
এদিকে দর্শক সারিতে দেখা গেছে সাবেক কমিটির আরও এক নেতাকে। মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ রাজন বসেছিলেন দর্শক সারির মাঝামাঝি অংশে। তিনিও রাজপথে আন্দোলন করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘ সময় কারানির্যাতিত হয়েছিলেন। গ্রেফতারের সময় মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট রাজুর বাসা গিয়ে তার পরিবার পরিজনের সাথে দেখাও করেছিলেন। কথা দিয়েছেন, ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হবে। কিন্তু কোথায় সেই মূল্যায়ন? আজ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে সাখাওয়াতের দেয়া সেই কথা মিথ্যা প্রমাণিত হচ্ছে। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, এসমস্ত ত্যাগী নেতারা আদৌ কি মূল্যায়ন পাবে?
অনুষ্ঠানে বক্তব্য চলাকালে আরও দেখা গেছে, মহানগর ও সদর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের কয়েকজন নেতাকর্মী ক্ষুব্দ হয়ে অনুষ্ঠান বাহিরে চলে যান। তারা প্রথমে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ না করতে চাইলেও পরে তারা গণমাধ্যমকে বিষয়টি জানান। তারা বলেন, অনুষ্ঠানে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি আবুল কাউসার আশা ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়ার সাথে যারা আন্দোলন সংগ্রাম করছে, তাদেরকে বক্তব্য দেয়ার সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। সিদ্ধিরগঞ্জ থানাসহ অন্যান্য থানার নেতাকর্মীদের বক্তব্য দেয়ার সুযোগ করে দিলেও বক্তব্যের তালিকায় সদর থানা মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব জাকির হোসেনের নাম থাকা সত্বেও পরে তা কেটে দেয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানের নামে স্বেচ্ছাচারিতা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।
এসব বিষয়ে মহানগর স্বেচ্ছসেবক দলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখন দলের দু:সময়। তাই তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলা ঠিক হবে না। তবে তারা যেটা করছে সেটা ঠিক হয়নি। সংগঠনে ত্যাগী নেতা আরও ছিলো। মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক কমিটিতে আমার মত অনেকই ছিলো যারা আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে কারানির্যাতিতসহ বিভিন্ন হামলা মামলার শিকার হয়েছেন। সংবর্ধনার তালিকা আমাকে না হোক, তাদেরকে রাখতে পারতেন। তাহলে আমার মনে অনুষ্ঠানটা আরও সুন্দর হতো। ত্যাগীরাও আরও উৎসাহ পেতো।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না আমাকে দাওয়াত দেয়া হয়নি। তবুও কেন্দ্রীয় নেতাদের সম্মানার্থে আমি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। আমার নাম ঘোষণা হলেও আমাকে মঞ্চে ডাকা হয়নি। তাই বসেছিলাম দর্শক সারিতেই। এনিয়ে আমার কোন কষ্ট নেই। তবে যেখানে আমাগী দিনের রাষ্ট্রনায়ক আমাদের প্রিয় অভিভাবক তারুণ্যে অহংকার তারেক রহমান বলে দিয়েছেন, আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে যেসব নেতাকর্মী ও সমর্থক কারানির্যাতিত সহ নানাভাবে নির্যাতিত হয়েছে, তাদেরকেই মূলত সংবর্ধনা দিতে। যাতে আগামী দিনে ওই সমস্ত ত্যাগী নেতারা আরও উজ্জীবিত হয়ে আন্দোলন সংগ্রামে ভূমিকা রাখতে পারে। কিন্তু তারা কেন এমন করলো আমার জানানেই। আমি আর কিছু বলতে চাই না।
এ বিষয়ে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাখাওয়াত ইসলাম রানার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কলটি রিসিভ করেন নি। তাই এ বিষয়ে তার বক্তব্য সম্ভব হয়নি।

ট্যাগ:

মুন্সীগঞ্জে জার্মান বিএনপির নেতা দেলোয়ার মোল্লাকে সংবর্ধনা

রানার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ মঞ্চে ডাকা হয়নি ত্যাগীদের, দেয়া হয়নি সংবর্ধণা ও বক্তব্যের সুযোগ

প্রকাশঃ 03:04:54 pm, Wednesday, 5 June 2024

নিজস্ব প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ত্যাগী নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মূলত অনুষ্ঠানটি কারানির্যাতিত অর্থ্যাৎ ত্যাগী নেতাকর্মীদের সংবর্ধনার অনুষ্ঠান হলেও এতে চরমভাবে অবমূল্যায়িত করা হয়েছে ত্যাগীদেরই। বুধবার (০৫ জুন) দুপুরে শহরের মিশনপাড়াস্থ হোসিয়ারী সমিতির কমিউনিটি সেন্টারে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এসএম জিলানীসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর বিএনপি শীর্ষ নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন। মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাখাওয়াত ইসলাম রানার সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মসিনুর রহমান বাবুর সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে এ অনুষ্ঠানে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক ও বর্তমান কমিটির অনেক ত্যাগী নেতাদের দাওয়াত দেয়া হয়নি। দাওয়াত না পেয়েও যারা উপস্থিত ছিলেন তাদেরকে ডাকা হয়নি মঞ্চে। শুধু তাই নয়, তাদেরকে কোন ধরনের বক্তব্য দেওয়ারও সুযোগ দেয়া হয়নি। অনুষ্ঠানে যেসব নেতাকর্মীদের সংবর্ধিত করা হয়েছে, ওই সময়ও পদের বাইরে থাকা ত্যাগী নেতাদের ডাকা হয়নি, দেয়া হয়নি সংবর্ধণা। আবার সংবর্ধিত নেতাদের মধ্যে এমন কয়েকজন আছেন, যারা কখনো কারানির্যাতি হন নি। শুধুমাত্র নিজেদের স্বেচ্ছাচারীতার কারনে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাখাওয়াত ইসলাম রানা এমনটা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, অনুষ্ঠানে সভামঞ্চের বাইরে অর্থ্যাৎ দর্শকসারিতে ছিলেন মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়াসহ সাবেক কমিটির আরও অনেকে। অথচ দল করতে গিয়ে একাধিকবার কারানির্যাতনসহ ডজন ডজন মামলা খেতে হয়েছে জিয়াকে। ওইসব মামলায় সপ্তাহে ৭ দিনের মধ্য ৫দিনই আদালতে হাজিরা দিতে দেখা যায় জিয়াকে। তবুও এত মামলা মাথায় নিয়ে দলের কাজ করে যাচ্ছেন জিয়া। এত কিছু করেও ত্যাগীদের তালিকায় জিয়ার নাম না থাকায় ক্ষুব্দ হয়েছেন অনেক নেতাকর্মী।
এদিকে দর্শক সারিতে দেখা গেছে সাবেক কমিটির আরও এক নেতাকে। মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ রাজন বসেছিলেন দর্শক সারির মাঝামাঝি অংশে। তিনিও রাজপথে আন্দোলন করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘ সময় কারানির্যাতিত হয়েছিলেন। গ্রেফতারের সময় মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট রাজুর বাসা গিয়ে তার পরিবার পরিজনের সাথে দেখাও করেছিলেন। কথা দিয়েছেন, ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হবে। কিন্তু কোথায় সেই মূল্যায়ন? আজ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে সাখাওয়াতের দেয়া সেই কথা মিথ্যা প্রমাণিত হচ্ছে। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, এসমস্ত ত্যাগী নেতারা আদৌ কি মূল্যায়ন পাবে?
অনুষ্ঠানে বক্তব্য চলাকালে আরও দেখা গেছে, মহানগর ও সদর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের কয়েকজন নেতাকর্মী ক্ষুব্দ হয়ে অনুষ্ঠান বাহিরে চলে যান। তারা প্রথমে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ না করতে চাইলেও পরে তারা গণমাধ্যমকে বিষয়টি জানান। তারা বলেন, অনুষ্ঠানে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি আবুল কাউসার আশা ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়ার সাথে যারা আন্দোলন সংগ্রাম করছে, তাদেরকে বক্তব্য দেয়ার সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। সিদ্ধিরগঞ্জ থানাসহ অন্যান্য থানার নেতাকর্মীদের বক্তব্য দেয়ার সুযোগ করে দিলেও বক্তব্যের তালিকায় সদর থানা মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব জাকির হোসেনের নাম থাকা সত্বেও পরে তা কেটে দেয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানের নামে স্বেচ্ছাচারিতা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।
এসব বিষয়ে মহানগর স্বেচ্ছসেবক দলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখন দলের দু:সময়। তাই তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলা ঠিক হবে না। তবে তারা যেটা করছে সেটা ঠিক হয়নি। সংগঠনে ত্যাগী নেতা আরও ছিলো। মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক কমিটিতে আমার মত অনেকই ছিলো যারা আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে কারানির্যাতিতসহ বিভিন্ন হামলা মামলার শিকার হয়েছেন। সংবর্ধনার তালিকা আমাকে না হোক, তাদেরকে রাখতে পারতেন। তাহলে আমার মনে অনুষ্ঠানটা আরও সুন্দর হতো। ত্যাগীরাও আরও উৎসাহ পেতো।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না আমাকে দাওয়াত দেয়া হয়নি। তবুও কেন্দ্রীয় নেতাদের সম্মানার্থে আমি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। আমার নাম ঘোষণা হলেও আমাকে মঞ্চে ডাকা হয়নি। তাই বসেছিলাম দর্শক সারিতেই। এনিয়ে আমার কোন কষ্ট নেই। তবে যেখানে আমাগী দিনের রাষ্ট্রনায়ক আমাদের প্রিয় অভিভাবক তারুণ্যে অহংকার তারেক রহমান বলে দিয়েছেন, আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে যেসব নেতাকর্মী ও সমর্থক কারানির্যাতিত সহ নানাভাবে নির্যাতিত হয়েছে, তাদেরকেই মূলত সংবর্ধনা দিতে। যাতে আগামী দিনে ওই সমস্ত ত্যাগী নেতারা আরও উজ্জীবিত হয়ে আন্দোলন সংগ্রামে ভূমিকা রাখতে পারে। কিন্তু তারা কেন এমন করলো আমার জানানেই। আমি আর কিছু বলতে চাই না।
এ বিষয়ে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাখাওয়াত ইসলাম রানার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কলটি রিসিভ করেন নি। তাই এ বিষয়ে তার বক্তব্য সম্ভব হয়নি।