আগামী ৮ মে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ প্রথম ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনকে ঘিরে নির্বাচনের শেষ পর্যায়ে বর্তমান তিনজনকে স্বাধীনতা পক্ষের শক্তিকে বিনা ভোটে নির্বাচিত করতে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে দ্বিতীয় দফায় এমপি সেলিম ওসমানের কঠোর বক্তব্যে দেওয়ার পরও উল্টো পথে বন্দরবাসী। সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি তুলেছেন সাধারণ ভোটাররা।
এমপির নির্দেশনাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে তিনটি পদে ৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর প্রচার প্রচারণায় বন্দরের অলিগলি। ভোট প্রার্থনায় ভোটারদের ঘরে ঘরে প্রার্থী ও প্রার্থীদের কর্মী সমর্থকরা। নির্বাচনের আচরণ বিধির তোয়াক্কা না করে এমপির ধারাবাহিক হুমকি দামকি অব্যহত থাকায় সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কায় প্রার্থীরা।
চেয়ারম্যান পদে ৫ জন মনোনয়ন পত্র দাখিল করলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনজন। তারা হলেন, বন্দর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও বর্তমান বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা এমএ রশীদ, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক (বহিস্কৃত) দুই বারের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল, মুছাপুর ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান জেলা জাতীয় পার্টির সহ সভাপতি মাকসুদ হোসেন।
নির্বাচন সুষ্ঠু হলে মাকসুদ হোসেন ও আতাউর রহমান মুকুল স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি ও স্বাধীনতা স্ব- পক্ষের শক্তি বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ রশীদ মধ্যে ত্রিমুখী লড়াই হবে। এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী তিন প্রার্থীর মধ্যে মাকসুদ হোসেন জেলা জুরে আলোচিত প্রার্থী।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ সানু, উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিদুল ইসলাম জুয়েল, মোশাঈদ রহমান ও এড. আলমগীর হোসেন।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন হলেন সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান এড. মাহমুদা আক্তার ও বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ছালিমা হোসেন শান্তা।
সরেজমিনে ঘুরে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানাগেছে, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আতাউর রহমান মুকুলের সঙ্গে বীরমুক্তিযোদ্ধা এমএ রশীদ চেয়ারম্যান পদে অংশ নিয়ে দুই বার বিপুল ভোটে পরাজিত হন।
২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেলিম ওসমান দ্বিতীয় মেয়াদে এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর এমএ রশীদকে বিনা ভোটে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত করেন। সেই সঙ্গে ভাইস চেয়ারম্যান পদে সানাউল্লাহ সানু ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে শান্তাকেও বিনা ভোটে নির্বাচিত করেন।
এবারের নির্বাচনেও তাদেরকে বিনা ভোটে নির্বাচিত করার চেষ্টা অব্যহত থাকলেও বিষয়টি বন্দরবাসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে ।
এমপি সেলিম ওসমানের আস্তাভাজন হয়ে তৃতীয় মেয়াদে মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় মাকসুদ হোসেন। তিনি ইউপি চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা মাঠে নেমে পড়ে বন্দরবাসীর ব্যপক সাড়া পেয়ে সুবিধাজনক অবস্থান তৈরী করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নারায়ণগঞ্জ -৫ আসনে প্রয়াত এমপি হাজী জালালউদ্দিনের ভাতিজা সাবেক তিন বারের এমপি এড. আবুল কালামের চাচাতো ভাই আতাউর রহমান মুকুল পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রাখতে পূর্বের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে এমপির হুমকিদমকি উপেক্ষা করে আতাউর রহমান মুকুল এবারের নির্বাচনে চিংড়ি প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রার্থী হিসাবে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে এমপির সমর্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ রশীদ আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক নেতাকর্মী ও চার ইউপি চেয়ারম্যানকে সঙ্গে নিয়ে দোয়াত কলম প্রতীকে প্রচার প্রচারণায় মাঠে আছেন। সাধারণ ভোটারদের সাড়া না পেলেও আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের সমর্থন রয়েছে।
এমপি সেলিম ওসমানের একক প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন আচরণ বিধি লঙ্ঘনের তোয়াক্কা না করে নানা মুখী বক্তব্যে আওয়ামীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উগ্র মনোভাব সৃষ্টি হওয়ায় সুষ্ঠু নির্বাচন না হওয়ার আতঙ্কে তিন পদে ৬ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী।
এদিকে গত ২ মে প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু হবে।
উল্লেখ্য, মদনপুর, ধামগড়, মুছাপুর, বন্দর ও কলাগাছিয়া ৫ টি ইউনিয়ন নিয়ে বন্দর উপজেলা পরিষদ গঠিত। মোট ৫৪টি ভোট কেন্দ্রে। মোট ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ৩১ হাজার ৫’শ ৬৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬৭ হাজার ৫শ’, নারী ভোটার ৬৪ হাজার ৬২।