পাঁচ টাকায় নবাবী গোসল! নারী বা পুরুষ, যে কেউ পুকুরের স্বচ্ছ পানিতে দিনভর কাটতে পারবেন সাতার। বলছি, পুরান ঢাকার ইসলামপুরের প্রায় ২০০ বছর বয়সী ‘গোল তালাবের’ কথা। স্থানীয়ভাবে যা ‘নবাববাড়ির পুকুর’ নামে পরিচিত। কাঠ ফাটা রোদে জনজীবন যখন দুর্বিষহ; তখন এমন পুকুর দিচ্ছে স্বস্তি।

প্রখর রোদে ঝলসে যাচ্ছে চারপাশ। গরমে ওষ্ঠাগত প্রাণ। একটু প্রশান্তি পেতে কৈশোরের এই দাপাদাপি। শুধু শিশু কিশোর নয় “তালাব পুকুরে” দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সব বয়সের মানুষ।

১৮৩০ সালে নবাব খাজা আলিম উল্লাহ এই পুকুরটি খনন করেন। পাড়সহ আট বিঘা জমির এই পুকুরটি এখনও ঐতিহ্যকে জানান দেয়। শতবছর পরও এই পুকুর তার স্বচ্ছ পানি এবং পরিবেশের জন্য যেকোনো পুকুরের থেকে আলাদা। চাইলেই এই পুকুরে যে কেউ সারতে পারেন গোসল। যতক্ষণ ইচ্ছে করতে পারেন জলকেলি। এ জন্য টোকেন মূল্য মাত্র ৫ টাকা।

তবে শর্ত আছে একটা। ব্যবহার করা যাবে না সাবান-শ্যাম্পু। প্রয়োজন হলে পাশেই আছে প্রথাগত গোসলখানা, পোশাক বদলের জায়গা। সেই সাথে সাঁতার জানা না থাকলে নামা যাবে না পুকুরে, রয়েছে এমন নিয়ম।

পুকুর পাড়জুড়ে নারকেল, আম, নিম, কাঁঠাল এবং চীনা খেজুরের গাছ যার কারণে পুকুরের পানিও অনেকটাই ঠান্ডা থাকে। এমন পরিবেশে নবাবী স্নানে আসা মেহমানদের সেবা দিতে প্রস্তুত নবাববাড়ির বংশধরেরা।

এ ব্যাপারে যমুনা নিউজের সাথে কথা বলেন, নবাববাড়ি ট্যাংক কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ কাইউম। তিনি বলেন, যেকোনো জেলার মানুষ চাইলেই এই পুকুরে সারতে পারবেন গোসল। তবে যারা সাঁতার জানেন না, তাদের পুকুরে নামতে দেয়া হয় না। নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, দুইজন নিরাপত্তাকর্মী রয়েছে। এছাড়া রয়েছে নৌকার ব্যবস্থা।

তবে শত বছরের এই ঐতিহ্যের দিকে কুনজর পড়েছে ভূমিখেকোদের। জাল দলিল তৈরি করে হয়েছে পুকুর দখলের অপচেষ্টা। পরিচালনা কমিটির আশা, রাজধানীজুড়ে মানুষের কাছে এই পুকুরের নাম পৌঁছলে, তাদের আনাগোনাতেই টিকে থাকবে ‘গোল তালাব’।সুত্র: যমুনা টিভি।

By admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *