সুবিধাভোগী ঝন্টু এখন বিএনপিতে আসতে চায় তৃণমূলে ক্ষোভ

ছাত্রজনতা গনঅভ্যুত্থানে পর নারায়ণগঞ্জে আষাঢ়ের বৃষ্টির দিনের মতো সময় বুজে ছাতা ধরছেন অনেকেই। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের সাথে আতাত করে বিভিন্ন সময় সুবিধাভোগীর সংখ্যাটা ছিল অনেক। তৎকালীন নারায়নগঞ্জ ৫ আসনের সংসদ সদস্য ক্ষমতা থাকা কালীন সময়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১১ নং ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার জমশের আলী ঝন্টু সুযোগ বুজে ছাতা ধরতে মিছ করেননি।

সেলিম ওসমানের আর্শিবাদে নিজের নির্বাচন সহ সকল সুবিধা ভোগ করেন তিনি এ ছাড়াও সেলিম ওসমানের নির্বাচনী প্রচারনায় স্বরব দেখা গেছে তাকে একজন বিশ্বস্ত লোক হিসেবে। বর্তমানে বিএনপির লোক হিসেবে দাবি করা ঝন্টু গত ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও সেলিম ওসমানের পক্ষ নিয়ে ঝন্টু বিবি মরিয়ম উচ্চ বালিকা ও আইইটি সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয়ের কেন্দ্র থেকে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী এসএম আকরামের এজেন্টদের ‘গালাগালি করে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছেন’ বলেও অভিযোগ ওঠে। একই বছরের ২৬ জুন একেএম সেলিম ওসমানের সংসদ সদস্য হিসেবে ৪ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানেও ছিলেন জমশের আলী ঝন্টু। বিএনপির কয়েকজন জনপ্রতিনিধিকে ‘মাই ম্যান’ বলে পরিচিত করতেন সেলিম ওসমান। ঝন্টু ছিলেন তাদের একজন।

বিএনপির দুর সময়ে পাশে থাকতে দেখা না গেলেও ছাত্রজনতা গনঅভ্যুত্থানে পর ভোল পাল্টে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব গিয়াসউদ্দিনের সাথে দেখা যাচ্ছে তাকে। বর্তমানে বিএনপিতে তৎপর তিনি। স্থানীয়ভাবে বিএনপি নেতা বলে পরিচিতি থাকলেও দলের সমর্থিত ‘ধানের শীষের’ প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করারও উদাহরণ রয়েছে তার।

গত ৫ আগস্ট ছাত্রজনতা গণঅভ্যুত্থানের মুখে টানা দেড় দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। সরকার পতনের পর নারায়ণগঞ্জ ছেড়েছেন ওসমান পরিবারের লোকজন। তারা বিদেশে পালিয়েছেন বলেও একাধিক গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আবারও বিএনপির আশ্রয়ে ফেরার চেষ্টায় তৎপর জমশের আলী ঝন্টু।

দীর্ঘ সময় পর গত ৩০ নভেম্বর ফতুল্লা বিএনপির এক সমাবেশে দেখা গেছে জমশের আলী ঝন্টুকে। ওই সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন। এ মঞ্চে ঝন্টুর উপস্থিতি বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

২০০৩ সালে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে পারিবারিক পরিচিতির কারণে প্রথমবারের মতো কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। এরপর ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা সিটি কর্পোরেশনে উন্নীত হলে তখন থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন তিনি।

বিএনপির স্থানীয় এক নেতা বলেন, ‘বিএনপির সমর্থন ও ওসমান পরিবারের আশীর্বাদে বারবার জিতলেও দলের প্রয়োজনে কখনো দেখা মেলেনি জমশের আলী ঝন্টুকে। আন্দোলন-সংগ্রামে যেমন তার দেখা মেলেনি, তেমনি বিপদেও কখনো তাকে পাশে পায়নি বিএনপির নেতাকর্মীরা। তাই সুদিনে বিএনপিতে তার ফেরা ও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেয়াকে আমরা ভালোভাবে নিচ্ছি না।’ বিএনপি নেতা-কর্মীরা বলছেন, সুযোগ আসলে আবারও ‘পল্টি’ দিবেন ঝন্টু, ভিড়বেন ‘ওসমান শিবিরে’। আষাঢ় মাসে যেমন হঠাৎ হঠাৎ বৃষ্টি হয় যেখানে বৃষ্টি হয় সেখানেই ছাতা ধরতে হয় ঠিক তেমনি হচ্ছেন ঝন্টু।

স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ওসমান পরিবারের সাথে জমশের আলী ঝন্টুর সখ্যতা ছিল প্রকাশ্যে। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমানের সভা-সমাবেশে তার সরব উপস্থিতি ছিল। তার বিরুদ্ধে চলতি বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সেলিম ওসমানের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়া ও নির্বাচনের দিন কর্মীদের ২ হাজার প্যাকেট বিরিয়ানি বিতরণের অভিযোগও রয়েছে।

ট্যাগ:

সারাদেশে সাদপন্থীদের কার্যক্রম বন্ধ এবং বিচারের দাবীতে ওলামা মাশায়েখদের সংবাদ সম্মেলন

সুবিধাভোগী ঝন্টু এখন বিএনপিতে আসতে চায় তৃণমূলে ক্ষোভ

প্রকাশঃ 01:59:38 pm, Sunday, 1 December 2024

ছাত্রজনতা গনঅভ্যুত্থানে পর নারায়ণগঞ্জে আষাঢ়ের বৃষ্টির দিনের মতো সময় বুজে ছাতা ধরছেন অনেকেই। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের সাথে আতাত করে বিভিন্ন সময় সুবিধাভোগীর সংখ্যাটা ছিল অনেক। তৎকালীন নারায়নগঞ্জ ৫ আসনের সংসদ সদস্য ক্ষমতা থাকা কালীন সময়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১১ নং ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার জমশের আলী ঝন্টু সুযোগ বুজে ছাতা ধরতে মিছ করেননি।

সেলিম ওসমানের আর্শিবাদে নিজের নির্বাচন সহ সকল সুবিধা ভোগ করেন তিনি এ ছাড়াও সেলিম ওসমানের নির্বাচনী প্রচারনায় স্বরব দেখা গেছে তাকে একজন বিশ্বস্ত লোক হিসেবে। বর্তমানে বিএনপির লোক হিসেবে দাবি করা ঝন্টু গত ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও সেলিম ওসমানের পক্ষ নিয়ে ঝন্টু বিবি মরিয়ম উচ্চ বালিকা ও আইইটি সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয়ের কেন্দ্র থেকে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী এসএম আকরামের এজেন্টদের ‘গালাগালি করে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছেন’ বলেও অভিযোগ ওঠে। একই বছরের ২৬ জুন একেএম সেলিম ওসমানের সংসদ সদস্য হিসেবে ৪ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানেও ছিলেন জমশের আলী ঝন্টু। বিএনপির কয়েকজন জনপ্রতিনিধিকে ‘মাই ম্যান’ বলে পরিচিত করতেন সেলিম ওসমান। ঝন্টু ছিলেন তাদের একজন।

বিএনপির দুর সময়ে পাশে থাকতে দেখা না গেলেও ছাত্রজনতা গনঅভ্যুত্থানে পর ভোল পাল্টে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব গিয়াসউদ্দিনের সাথে দেখা যাচ্ছে তাকে। বর্তমানে বিএনপিতে তৎপর তিনি। স্থানীয়ভাবে বিএনপি নেতা বলে পরিচিতি থাকলেও দলের সমর্থিত ‘ধানের শীষের’ প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করারও উদাহরণ রয়েছে তার।

গত ৫ আগস্ট ছাত্রজনতা গণঅভ্যুত্থানের মুখে টানা দেড় দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। সরকার পতনের পর নারায়ণগঞ্জ ছেড়েছেন ওসমান পরিবারের লোকজন। তারা বিদেশে পালিয়েছেন বলেও একাধিক গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আবারও বিএনপির আশ্রয়ে ফেরার চেষ্টায় তৎপর জমশের আলী ঝন্টু।

দীর্ঘ সময় পর গত ৩০ নভেম্বর ফতুল্লা বিএনপির এক সমাবেশে দেখা গেছে জমশের আলী ঝন্টুকে। ওই সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন। এ মঞ্চে ঝন্টুর উপস্থিতি বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

২০০৩ সালে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে পারিবারিক পরিচিতির কারণে প্রথমবারের মতো কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। এরপর ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা সিটি কর্পোরেশনে উন্নীত হলে তখন থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন তিনি।

বিএনপির স্থানীয় এক নেতা বলেন, ‘বিএনপির সমর্থন ও ওসমান পরিবারের আশীর্বাদে বারবার জিতলেও দলের প্রয়োজনে কখনো দেখা মেলেনি জমশের আলী ঝন্টুকে। আন্দোলন-সংগ্রামে যেমন তার দেখা মেলেনি, তেমনি বিপদেও কখনো তাকে পাশে পায়নি বিএনপির নেতাকর্মীরা। তাই সুদিনে বিএনপিতে তার ফেরা ও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেয়াকে আমরা ভালোভাবে নিচ্ছি না।’ বিএনপি নেতা-কর্মীরা বলছেন, সুযোগ আসলে আবারও ‘পল্টি’ দিবেন ঝন্টু, ভিড়বেন ‘ওসমান শিবিরে’। আষাঢ় মাসে যেমন হঠাৎ হঠাৎ বৃষ্টি হয় যেখানে বৃষ্টি হয় সেখানেই ছাতা ধরতে হয় ঠিক তেমনি হচ্ছেন ঝন্টু।

স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ওসমান পরিবারের সাথে জমশের আলী ঝন্টুর সখ্যতা ছিল প্রকাশ্যে। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমানের সভা-সমাবেশে তার সরব উপস্থিতি ছিল। তার বিরুদ্ধে চলতি বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সেলিম ওসমানের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়া ও নির্বাচনের দিন কর্মীদের ২ হাজার প্যাকেট বিরিয়ানি বিতরণের অভিযোগও রয়েছে।