৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবি হেফাজতে ইসলামের

আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইসকন নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম নারায়ণগঞ্জ এর নেতৃবৃন্দরা। চট্টগ্রামে সরকারি আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে হত্যার প্রতিবাদে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবির বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এমন দাবি তুলেছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সিনিয়র আমীর আল্লামা আব্দুল আউয়াল।

শুক্রবার (২৯শে নভেম্বর) বাদ জুম্মা ডিআইটি রেল কলোনি জামে মসজিদের সামনে উক্ত বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রধান বক্তা হিসেবে আব্দুল আউয়াল বলেন, অনেক রক্তের বিনিময়ে এদেশ স্বাধীন হয়েছে। এখানে তথাকথিত ইসকন নামীয় সংগঠনের সন্ত্রাসী কর্মকা- করতে দেওয়ার জন্য নয়। যারা একের পর এক এভাবে আমাদের দেশটাকে অশান্ত করছে। আমার সনাতন ধর্মের ভাইয়েরা, এই দেশ স্বাধীনের সময় আমরা নিজেরা আপনাদের মন্দিরে গিয়ে আপনাদের অভয় দিয়েছিলাম এবং হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল আপনারা নির্দ্বিধায় আপনাদের ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনা করুণ। যেকোন অশুভ কোন শক্তি কিছু করার চেষ্টা করলে আমরা তাদেরকে প্রতিহত করবো। আপনারা সনাতন ধর্ম অবলম্বী ও সকল সংখ্যালঘু ভাইয়েরা আমাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এ দেশকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য আমাদেরকে সহযোগিতা করবেন এ জোড় দাবি আমি আপনাদের কাছে রাখছি।

ইসকনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ইসকন নামীয় উগ্রবাদ এবং সন্ত্রাসী সংগঠনকে অবশ্যই আমাদের দেশের তথ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এবং আমাদের উপদেষ্টাদের পক্ষ থেকে তাদের নিষিদ্ধ করার জোড় দাবি জানাচ্ছি আমরা। যদি এভাবে তাদেরকে প্রশ্রয় দেওয়া হয় আর সরকারও যদি নতজানু চিন্তা ভাবনা করে প্রয়োজন বোধে আমারা তাদেরকেও মোকাবেলা করতে এদেশের জনগণ দ্বিধাবোধ করবে না। আমাদের এক ভাইকে শহীদ করে দিয়েছে। খুতবায় বলেছি মুসলিম জাতি মৃত্যুকে ভয় করেন। যে জাতি মৃত্যুকে ভয় করেনা সেই জাতিকে কোনদিন পিছনে হটানোর কোন অবকাশ নেই। যেকোন অন্যায়কে মোকাবেলা করতে তারা বদ্ধপরিকর। নিজের ইমান নিয়ে দেশের জন্য, জাতির জন্য, ইসলামের জন্য হুংকার দিয়ে ঝাপিয়ে পড়বে এতো কোন সন্দেহ নেই।

তিনি আরো বলেন, আমরা অল্প সময়ের নোটিশে এখানে একত্রিত হয়েছি। আমরা দেখতে চাই ৪৮ ঘণ্টার ভেতরে ইসকনকে নিষিদ্ধ করা হোক এবং আমাদের যেভাইকে নির্মম ভাবে শহীদ করা হয়েছে তার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিচার কার্যক্রম যদি উপেক্ষিত হয় তাহলে এই দেশের জনগণ বিচার হাতে নিতে বাধ্য হবে।

যৌথবাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহ্বান রেখে তিনি বলেন, যৌথবাহিনীর সকলে আপনারা দেশটাকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য আপনারা এগিয়ে আসুন। যেমন করে আপনারা ৫ আগস্টের পরে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য এগিয়ে এসেছিলেন। আবারো দেশটাকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য আপনারা এগিয়ে আসুন। এই দেশের জনগণ আপনাদেরকে সামনে রেখে আপনাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবে।

তিনি বলেন, আজকে আমরা প্রাথমিক ভাবে এখানে ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবিতে একত্রিত হয়েছি। দেশ হেফাজত করার দায়িত্ব আমাদের। এই দেশের জনগণ আমরা একসাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশকে এগিয়ে নিবো, ইসলামকে এগিয়ে নিবো। প্রত্যেক ধর্মাবলম্বী তাদের ধর্মের কাজ করবে। কিন্তু যদি কোনো ইসলামীও কোন ধর্মের প্রতি কিছু করো তাকেও এদেশের জনগণ প্রতিহত করে ছাড়বে। নারায়ণগঞ্জে সকল ধর্মাবলম্বীদের সাথে অত্যন্ত মনোরম ভাবে তাদের সাথে আমাদের জীবনটা কাটছে। আমরা সব সময় সহনশীল ও সহমর্মিতার উপর বিশ্বাসী। এদেশের মন্দির, মসজিদ, হিন্দুদের শ্মশান ও মুসলিমদের কবরস্থান পাশাপাশি। কোনো রকমের অশালীন এবং কোনো রকমের উস্কানি তাদের এবং আমাদের মধ্যে নেই। আমরা চাচ্ছি আমরা শান্তিপূর্ণভাবে দেশে বেঁচে থাকি। কিন্তু ইসকন তোমরা আমাদেরকে অশান্তি করছো যার কারণে তোমাকে হয়তো এসব উস্কানিমূলক কথাবার্তা থেকে ফিরে আসতে হবে, আর তা যদি না হয় তাহলে এদেশের মানুষ হাতে আইন নিয়ে তোমাদেরকে এই দেশ থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেই ছাড়বে।

বক্তব্য শেষে আল্লাম আব্দুল আউয়াল নিজেই দোয়ার মাধ্যমে বিক্ষোভ সমাবেশের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখে, মাওলানা আব্দুল কাদির, খেলাফত মজলিস নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি এ.বি.এম সিরাজুল মামুন, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মুফতি মাওলানা জাকির হোসেন কাশেমী, মাওলানা ইকবাল কবির ফারুকী, মাওলানা আবু সায়েম খালেদ, মাওলানা হাফিজুর রহমান, খেলাফত মজসলিস নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস আহম্মেদ, মাওলানা রবিউল ইসলাম, মাওলানা কাউসার আহম্মেদ কাশেমী সহ অন্যান্যরা।

ট্যাগ:

সারাদেশে সাদপন্থীদের কার্যক্রম বন্ধ এবং বিচারের দাবীতে ওলামা মাশায়েখদের সংবাদ সম্মেলন

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবি হেফাজতে ইসলামের

প্রকাশঃ 04:51:08 pm, Friday, 29 November 2024

আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইসকন নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম নারায়ণগঞ্জ এর নেতৃবৃন্দরা। চট্টগ্রামে সরকারি আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে হত্যার প্রতিবাদে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবির বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এমন দাবি তুলেছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সিনিয়র আমীর আল্লামা আব্দুল আউয়াল।

শুক্রবার (২৯শে নভেম্বর) বাদ জুম্মা ডিআইটি রেল কলোনি জামে মসজিদের সামনে উক্ত বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রধান বক্তা হিসেবে আব্দুল আউয়াল বলেন, অনেক রক্তের বিনিময়ে এদেশ স্বাধীন হয়েছে। এখানে তথাকথিত ইসকন নামীয় সংগঠনের সন্ত্রাসী কর্মকা- করতে দেওয়ার জন্য নয়। যারা একের পর এক এভাবে আমাদের দেশটাকে অশান্ত করছে। আমার সনাতন ধর্মের ভাইয়েরা, এই দেশ স্বাধীনের সময় আমরা নিজেরা আপনাদের মন্দিরে গিয়ে আপনাদের অভয় দিয়েছিলাম এবং হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল আপনারা নির্দ্বিধায় আপনাদের ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনা করুণ। যেকোন অশুভ কোন শক্তি কিছু করার চেষ্টা করলে আমরা তাদেরকে প্রতিহত করবো। আপনারা সনাতন ধর্ম অবলম্বী ও সকল সংখ্যালঘু ভাইয়েরা আমাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এ দেশকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য আমাদেরকে সহযোগিতা করবেন এ জোড় দাবি আমি আপনাদের কাছে রাখছি।

ইসকনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ইসকন নামীয় উগ্রবাদ এবং সন্ত্রাসী সংগঠনকে অবশ্যই আমাদের দেশের তথ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এবং আমাদের উপদেষ্টাদের পক্ষ থেকে তাদের নিষিদ্ধ করার জোড় দাবি জানাচ্ছি আমরা। যদি এভাবে তাদেরকে প্রশ্রয় দেওয়া হয় আর সরকারও যদি নতজানু চিন্তা ভাবনা করে প্রয়োজন বোধে আমারা তাদেরকেও মোকাবেলা করতে এদেশের জনগণ দ্বিধাবোধ করবে না। আমাদের এক ভাইকে শহীদ করে দিয়েছে। খুতবায় বলেছি মুসলিম জাতি মৃত্যুকে ভয় করেন। যে জাতি মৃত্যুকে ভয় করেনা সেই জাতিকে কোনদিন পিছনে হটানোর কোন অবকাশ নেই। যেকোন অন্যায়কে মোকাবেলা করতে তারা বদ্ধপরিকর। নিজের ইমান নিয়ে দেশের জন্য, জাতির জন্য, ইসলামের জন্য হুংকার দিয়ে ঝাপিয়ে পড়বে এতো কোন সন্দেহ নেই।

তিনি আরো বলেন, আমরা অল্প সময়ের নোটিশে এখানে একত্রিত হয়েছি। আমরা দেখতে চাই ৪৮ ঘণ্টার ভেতরে ইসকনকে নিষিদ্ধ করা হোক এবং আমাদের যেভাইকে নির্মম ভাবে শহীদ করা হয়েছে তার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিচার কার্যক্রম যদি উপেক্ষিত হয় তাহলে এই দেশের জনগণ বিচার হাতে নিতে বাধ্য হবে।

যৌথবাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহ্বান রেখে তিনি বলেন, যৌথবাহিনীর সকলে আপনারা দেশটাকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য আপনারা এগিয়ে আসুন। যেমন করে আপনারা ৫ আগস্টের পরে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য এগিয়ে এসেছিলেন। আবারো দেশটাকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য আপনারা এগিয়ে আসুন। এই দেশের জনগণ আপনাদেরকে সামনে রেখে আপনাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবে।

তিনি বলেন, আজকে আমরা প্রাথমিক ভাবে এখানে ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবিতে একত্রিত হয়েছি। দেশ হেফাজত করার দায়িত্ব আমাদের। এই দেশের জনগণ আমরা একসাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশকে এগিয়ে নিবো, ইসলামকে এগিয়ে নিবো। প্রত্যেক ধর্মাবলম্বী তাদের ধর্মের কাজ করবে। কিন্তু যদি কোনো ইসলামীও কোন ধর্মের প্রতি কিছু করো তাকেও এদেশের জনগণ প্রতিহত করে ছাড়বে। নারায়ণগঞ্জে সকল ধর্মাবলম্বীদের সাথে অত্যন্ত মনোরম ভাবে তাদের সাথে আমাদের জীবনটা কাটছে। আমরা সব সময় সহনশীল ও সহমর্মিতার উপর বিশ্বাসী। এদেশের মন্দির, মসজিদ, হিন্দুদের শ্মশান ও মুসলিমদের কবরস্থান পাশাপাশি। কোনো রকমের অশালীন এবং কোনো রকমের উস্কানি তাদের এবং আমাদের মধ্যে নেই। আমরা চাচ্ছি আমরা শান্তিপূর্ণভাবে দেশে বেঁচে থাকি। কিন্তু ইসকন তোমরা আমাদেরকে অশান্তি করছো যার কারণে তোমাকে হয়তো এসব উস্কানিমূলক কথাবার্তা থেকে ফিরে আসতে হবে, আর তা যদি না হয় তাহলে এদেশের মানুষ হাতে আইন নিয়ে তোমাদেরকে এই দেশ থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেই ছাড়বে।

বক্তব্য শেষে আল্লাম আব্দুল আউয়াল নিজেই দোয়ার মাধ্যমে বিক্ষোভ সমাবেশের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখে, মাওলানা আব্দুল কাদির, খেলাফত মজলিস নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি এ.বি.এম সিরাজুল মামুন, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মুফতি মাওলানা জাকির হোসেন কাশেমী, মাওলানা ইকবাল কবির ফারুকী, মাওলানা আবু সায়েম খালেদ, মাওলানা হাফিজুর রহমান, খেলাফত মজসলিস নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস আহম্মেদ, মাওলানা রবিউল ইসলাম, মাওলানা কাউসার আহম্মেদ কাশেমী সহ অন্যান্যরা।