বুধ. নভে ১৩, ২০২৪

সন্তানকে বাঁচাতে শহীদ মিনারে মায়ের আর্তনাদ

সানোয়ারা বেগম নামের এক স্বামীহারা গৃহবধু তার দুটি অবুঝ শিশুকে নিয়ে অঝোর ধারায় কাঁদছে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের বেদীতে বসে।

শনিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরেরর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে এমনই দৃশ্য দেখা যায়।

জানা যায়, তাদের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানার শম্ভুপুরা ইউনিয়নের দশদোনা, নয়াগাঁও এলাকায়।

সম্পত্তি বিক্রির ৪০লাক্ষ টাকা জমির দলিল সহ ঘরে থাকা নগদ টাকা লুট করে তাকে ও তার দুটি শিশুকে হত্যার হুমকি দেয় স্থানীয় এলাকার সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় সানোয়ারা বেগম সোনারগাঁ থানায় বাদী হয়ে একটি লিথিত অভিযোগ দায়ের করেন এবং এবিষয়ে সেনা ক্যাম্প সিদ্ধিরগঞ্জ অফিসার ইনচার্জ বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সানোয়ারা বেগম মৃত মোঃ আনোয়ার হোসেন মিয়ার মেয়ে।

লিখিত অভিযোগের বিবরনে সানোয়ারা বেগম জানান, তার স্বামী শাহানুর আলম (৫৫), পিতা-আব্দুল হাই, মাতা-সানোয়ারা বেগম, সাং-দশদোনা, ইউপি-শম্ভুপুরা, থানা-সোনারগাঁ, জেলা-নারায়ণগঞ্জ এর সাথে আমার বিগত ১৩/১০/২০১৭ তারিখে পূর্ব হইতে পারিবারিক ভাবে ইসলামী শরীয়া মোতাবেক ৩,০০,০০০/-(এক লক্ষ্য) টাকা ধের মোহর ধার্য করিয়া বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। বিবাহের পর হইতে আমাদের সুখের সংসার ও দাম্পত্য জীবনে একটি পুত্র সন্তান রহিনুর আলম সাফি (০৪), আরেকটি মেয়ে সামিয়া আলম মারুহা (০৬), জন্মগ্রহণ করে।

পরবর্তীতে আমার স্বামী স্ট্রক করিয়া বিগত ইং- ১১/১২/২০২৩ তারিখে মৃত্যুবরণ করেন। সেই সূত্রে আমার স্বামীর সমস্ত টাকা পয়সা জায়গা সম্পত্তি আমার সন্তান ওয়ারিস সূত্রে মালিক হিসেবে ভোগদখল করিয়া আসিতেছি। এমতাবস্থায় বিবাদী ১। রিপন (৩৫), ২। পারভীন (৪০), উভয়পিতা-মৃত শাহজাহান আহমেদ, ৩। ময়না (২৭), স্বামী-রিপন, ৪। পিয়ার জান মিয়া
(৫৫), পিতা-মৃত আব্দুল হাই, ৫। আফসার (৫৬), পিতা-অজ্ঞাত, ৬। শিরিনা (৩৫), স্বামী-আবুল হোসেন, ৭। জিহাদ (২০), পিতা-স্বপন, সোনারগাঁ থানার শম্ভুপুরা ইউনিয়নের দশদোনা, নয়াগাঁও এলাকার
অজ্ঞাতনামা ৫/৭ জন সহ উল্লেখিত আসামীরা চাঁদাবাজি মাদক সেবন, মাদক বিক্রি সহ বহু অনুরুপ ঘটনার আসামী হিসেবে এলাকায় চিহ্নিত অপরাধী।

তাহারা সংঘবদ্ধভাবে চলাফেরা করে। উক্ত ১নং বিবাদীর নেতৃত্বে উপরোক্ত বিবাদীগন আমার সন্তানদের জায়গা জমি জোরপূর্বক জবরদখল সহ আমার সন্তানদের বাড়ী থেকে উচ্ছেদ করার জন্য পায়তারা করিয়া আসিতেছে। উপরোক্ত বিবাদীগন পরস্পর উচ্ছৃংখল, দাঙ্গাবাজ, পরধনলোভী ও খারাপ প্রকৃতির ব্যক্তিগন। উপরোক্ত বিবাদীগন আমার স্বামীর সম্পত্তি থেকে আমাদের উচ্ছেদ করার জন্য সর্বদাই আমাদের নানাদিক ক্ষতিসাধনের চেষ্টায় লিপ্ত আছে।

আমার স্বামী ও বাবা মৃত্যুবরণ করার কারণে আমার দুইটি সন্তান নিয়া আর্থীক ভাবে খুবই কষ্টে জীবন যাপন করিয়া আসিতেছি। যার ফলে আমার বাড়ীর পার্শ্বে কিছু জমি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়া জমির বায়না বাবদ ৪,০০,০০০/-(চার লক্ষ্য) টাকা গ্রহণ করি।
উপরোক্ত বিবাদীগন এরই সূত্র ধরিয়া গত ইং- ০৪/১০/২০২৪ তারিখ বিকাল অনুমান ৪:৩০ ঘটিকার সময়ে উপরোক্ত বিবাদীগন সহ অজ্ঞাতনামা আরও ৫/৭ জন বিবাদী পূর্বে-পরিকল্পিত ভাবে তাহাদের হাতে থাকা প্রাণঘাতী ধারালো রামদা, ছেদা লোহার পাইপ, কাঠের ও বাঁশের লাঠিসোঠা ইত্যাদি দেশী অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত হইয়া বে-আইনী জনতায় দলবদ্ধ হইয়া এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করিয়া আমার বিল্ডিং ঘরে অনধিকার প্রবেশ করিয়া মেইন দা লাগাইয়া ১নং বিবাদীর আমার চুলের মুঠি ধরিয়া গলায় চাপ দিয়া কিল-ঘুষি মারিয়া শরীরের’
বিভিন্ন স্থানে নীলা-ফুলা জখম করে। আমি মাটিতে পরিয়া গেলে উপরোক্ত বিবাদীগন আমাকে রুমে নিয়া জামা কাপর টানা হেচরা করিয়া আমার স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়া শ্রীলতাহানী করে। আমাকে আটক করিয়া জমি বিক্রির টাকার তথ্য জানিয়া চাউলের ড্রামে থাকা নগদ ৪,০০,০০০/-(চার লক্ষ্য) টাকা, এক ভরি স্বর্ণের চেইন যাহার মূল্য ১,২০,০০০/- (এক লক্ষ্য বিশ্ব হাজার) টাকা, আমাদের জমির ৭টি মূল দলিল ছিনাইয়া নেয়। আমি ও আমার সন্তানের ডাকচিৎকার করিলে বিবাদীগন এই মর্মে প্রকাশ করে যে, যদি আমরা আমাদের ওয়ারিসের সকল সম্পত্তি ছাড়িয়া চলিয়া না যাই তাহলে আমাকে সহ আমার সন্তানদের এক এক করে হত্যা করিয়া ফেলিবে বলিয়া হুমকি প্রদান করে।

তিনি আরও জানায়, বর্তমানে নিজের জীবন ও তার দুটি সন্তান এবং তার নানীকে নিয়ে জীবনের নিরাপত্তার লক্ষে নারায়ণগঞ্জ শহরের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে এসে আশ্রয় নিয়েছে। সে শারিরীক ভাবে গুরুতর আহত হওযায় নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগে এসে চিকিৎসা করান। সানোয়ারা বেগম তার ও তার দুটি সন্তানের জীবনের নিরাপত্তা চেযেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পশাসন ও জেলা পুলিশ সুপারের নিকট।

By admin

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *