দেশে নারী-পুরুষ সমান মর্যাদা পাবে : জামায়াত আমির

দেশে নারী-পুরুষ সমান নিরাপত্তা ও মর্যাদা পাবে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। শুক্রবার সকালে সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জেলা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন জামায়াতের আমির।

তিনি বলেছেন, আমরা এমন দেশ গড়তে চাই, যেখানে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা কোথাও নিরাপত্তার জন্য পাহারা বসাতে হবে না। একজন নাগরিক তার ঘরে-বাইরে, কর্মস্থলে ও সমাজে সবখানে নিরাপত্তা এবং স্বাধীনতা ভোগ করবে। এদেশে নারী-পুরুষের সমান নিরাপত্তা ও মর্যাদা পাবে।

তিনি আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামী কোরআনের আলোকে রাষ্ট্রগঠনের সুযোগ পেলে দেশের নারীরা মর্যাদা ও ইজ্জতের সহিত তাদের দায়িত্ব পালনের সুযোগ পাবেন। তারা যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় কাজে অবদান রাখবেন।

কর্মী সম্মেলনে জামায়াতের আমির বলেন, একটি শক্তি দেশের মর্যাদা ক্ষুন্ন করতে মিথ্যাচার করে বিদেশি বন্ধুদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু তাদের ষড়যন্ত্র কাজে আসবে না। মানুষ এখন অনেক সজাগ। বাংলাদেশের মানুষ এখন শান্তিতে আছে। শান্তি বিঘ্নিত করতে দফায় দফায় চেষ্টা চলছে। একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে, ইনশাআল্লাহ।

তিনি আরও বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি বৈঠার নৃশংসতার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে জানান দিয়েছিল তারা ক্ষমতার থাকতে খুন-গুমের পথ বেছে নেবে। সেদিন থেকে বাংলাদেশ পথ হারিয়ে ছিল। দীর্ঘ সাড়ে ১৪ বছর পর বাংলাদেশ মুক্তি পেয়েছে। আওয়ামী লীগ জামায়াতের অনেক শীর্ষ নেতাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বিচারের নামে প্রহসন করে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে। তারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নির্বিচারে ছাত্র-জনতার উপর গুলি চালিয়েছে।

আওয়ামী লীগের রাজনীতি প্রসঙ্গে শফিকুর রহমান বলেন, তারা যেসব নিরীহ জনগণকে খুন করেছে তাদের পরিবারের কাছে জানতে চান তারা আর এ ধরনের রাজনীতি চায় কি-না? যারা পঙ্গুত্ববরণ করে হাসপাতালের বেডে প্যারালাইসড হয়ে আছে তাদের মতামত নিন।

জামায়াতের আমির বলেন, আমরা একটি বৈষম্যহীনও ন্যায়বিচারের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আল্লাহর হুকুম ও জনগণের ভালোবাসায় জামায়াতে ইসলামী সে সুযোগ পেলে আমাদের হাত দিয়ে কোনো চাঁদাবাজি হবে না, কোন চাঁদাবাজি বরদাশতও করা হবে না। বাংলাদেশের এক ইঞ্চি মাটির উপর কোনো দখল বাণিজ্য হতে দেওয়া হবে না। অফিসে বসে কেউ ঘুষ খাওয়ার দুঃসাহস দেখাতে পারবে না। যুব সমাজের হাতকে কারিগরের হাতে রূপান্তরিত করা হবে। উন্নত দেশের মতো পড়ালেখা শেষ করার আগেই তাদের হাতে কাজ আসবে। আমরা তাদরেকে এমন যোগ্য কারিগর হিসেবেই তৈরি করব। আমরা যুব সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে চাই।

বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে দলের প্রতিটি কর্মীকে প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীর পক্ষে এককভাবে ছাত্র-জনতার স্বপ্নের দেশ গঠন করা সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন গোটা জাতির ঐক্যবদ্ধ চেষ্টা ও সহযোগিতা। আমরা শান্তি, অগ্রগতি, ন্যায়বিচার ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাই।

সিলেট জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নজরুল ইসলাম ও মাওলানা মাশুক আহমদের যৌথ পরিচালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক ফজলুর রহমান ও সিলেট মহানগর আমির মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম।

ট্যাগ:

সারাদেশে সাদপন্থীদের কার্যক্রম বন্ধ এবং বিচারের দাবীতে ওলামা মাশায়েখদের সংবাদ সম্মেলন

দেশে নারী-পুরুষ সমান মর্যাদা পাবে : জামায়াত আমির

প্রকাশঃ 01:47:08 pm, Friday, 13 December 2024

দেশে নারী-পুরুষ সমান নিরাপত্তা ও মর্যাদা পাবে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। শুক্রবার সকালে সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জেলা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন জামায়াতের আমির।

তিনি বলেছেন, আমরা এমন দেশ গড়তে চাই, যেখানে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা কোথাও নিরাপত্তার জন্য পাহারা বসাতে হবে না। একজন নাগরিক তার ঘরে-বাইরে, কর্মস্থলে ও সমাজে সবখানে নিরাপত্তা এবং স্বাধীনতা ভোগ করবে। এদেশে নারী-পুরুষের সমান নিরাপত্তা ও মর্যাদা পাবে।

তিনি আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামী কোরআনের আলোকে রাষ্ট্রগঠনের সুযোগ পেলে দেশের নারীরা মর্যাদা ও ইজ্জতের সহিত তাদের দায়িত্ব পালনের সুযোগ পাবেন। তারা যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় কাজে অবদান রাখবেন।

কর্মী সম্মেলনে জামায়াতের আমির বলেন, একটি শক্তি দেশের মর্যাদা ক্ষুন্ন করতে মিথ্যাচার করে বিদেশি বন্ধুদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু তাদের ষড়যন্ত্র কাজে আসবে না। মানুষ এখন অনেক সজাগ। বাংলাদেশের মানুষ এখন শান্তিতে আছে। শান্তি বিঘ্নিত করতে দফায় দফায় চেষ্টা চলছে। একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে, ইনশাআল্লাহ।

তিনি আরও বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি বৈঠার নৃশংসতার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে জানান দিয়েছিল তারা ক্ষমতার থাকতে খুন-গুমের পথ বেছে নেবে। সেদিন থেকে বাংলাদেশ পথ হারিয়ে ছিল। দীর্ঘ সাড়ে ১৪ বছর পর বাংলাদেশ মুক্তি পেয়েছে। আওয়ামী লীগ জামায়াতের অনেক শীর্ষ নেতাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বিচারের নামে প্রহসন করে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে। তারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নির্বিচারে ছাত্র-জনতার উপর গুলি চালিয়েছে।

আওয়ামী লীগের রাজনীতি প্রসঙ্গে শফিকুর রহমান বলেন, তারা যেসব নিরীহ জনগণকে খুন করেছে তাদের পরিবারের কাছে জানতে চান তারা আর এ ধরনের রাজনীতি চায় কি-না? যারা পঙ্গুত্ববরণ করে হাসপাতালের বেডে প্যারালাইসড হয়ে আছে তাদের মতামত নিন।

জামায়াতের আমির বলেন, আমরা একটি বৈষম্যহীনও ন্যায়বিচারের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আল্লাহর হুকুম ও জনগণের ভালোবাসায় জামায়াতে ইসলামী সে সুযোগ পেলে আমাদের হাত দিয়ে কোনো চাঁদাবাজি হবে না, কোন চাঁদাবাজি বরদাশতও করা হবে না। বাংলাদেশের এক ইঞ্চি মাটির উপর কোনো দখল বাণিজ্য হতে দেওয়া হবে না। অফিসে বসে কেউ ঘুষ খাওয়ার দুঃসাহস দেখাতে পারবে না। যুব সমাজের হাতকে কারিগরের হাতে রূপান্তরিত করা হবে। উন্নত দেশের মতো পড়ালেখা শেষ করার আগেই তাদের হাতে কাজ আসবে। আমরা তাদরেকে এমন যোগ্য কারিগর হিসেবেই তৈরি করব। আমরা যুব সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে চাই।

বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে দলের প্রতিটি কর্মীকে প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীর পক্ষে এককভাবে ছাত্র-জনতার স্বপ্নের দেশ গঠন করা সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন গোটা জাতির ঐক্যবদ্ধ চেষ্টা ও সহযোগিতা। আমরা শান্তি, অগ্রগতি, ন্যায়বিচার ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাই।

সিলেট জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নজরুল ইসলাম ও মাওলানা মাশুক আহমদের যৌথ পরিচালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক ফজলুর রহমান ও সিলেট মহানগর আমির মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম।