সুরা ইখলাস কোরআনের ১১২তম সুরা, আয়াত সংখ্যা ৪টি, রুকু ১টি। সুরাটি মক্কায় নাকি মদিনায় অবতীর্ণ এ নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। মক্কার মুশরিক বা মদিনার ইহুদিরা নবিজিকে (সা.) প্রশ্ন করেছিল, আল্লাহর বংশ-পরিচয় কী? তাদের প্রশ্নের জবাবে এ সুরা অবতীর্ণ হয়।
সুরা ইখলাস অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ সুরা। হাদিসে সুরা ইখলাসকে কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ বলা হয়েছে। বর্ণিত রয়েছে, একবার রাসুল (সা.) বললেন, তোমরা একত্র হও, আমি তোমাদের কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ শোনাব। এরপর রাসুল (সা.) সুরা ইখলাস পাঠ করলেন। (সহিহ মুসলিম)
আবু সাইদ খুদরি (রা.) বলেন, নবিজি (সা.) একদিন বললেন, তোমাদের প্রত্যেকেই কি প্রতি রাতে কুরআনের এক তৃতীয়াংশ তিলাওয়াত করতে পারে না? বিষয়টি সাহাবীদের কাছে কঠিন মনে হলো। তখন নবিজি (সা.) বললেন, আমলটি সহজ, কারণ সুরা ইখলাসই কোরআনের এক তৃতীয়াংশ। (সহিহ বুখারি)
বিভিন্ন হাদিসে সুরা ইখলাস পাঠ করার আরও অনেক ফজিলত, সওয়াব ও পুরস্কারের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে মুআজ ইবনে আনাস জুহানি (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসটি উল্লেখযোগ্য। এ হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ‘কুল হুয়াল্লাহু আহাদ’ শেষ পর্যন্ত ১০ বার পাঠ করবে, আল্লাহ তাআলা ওই ব্যক্তির জন্য জান্নাতে একটি প্রাসাদ নির্মাণ করবেন। এ কথা শুনে ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) বললেন, তাহলে আমরা তো অনেক প্রাসাদের মালিক হয়ে যাবো! আল্লাহর রাসুল (সা.) বললেন, আল্লাহ তাআলাও বেশি দানশীল ও বেশি পবিত্র। (মুসনাদে আহমদ)
ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ায় একটি ঘরের মালিক হওয়ার জন্য আমরা কত বেশি পরিশ্রম করতে প্রস্তুত থাকি। অথচ কত সহজ আমল করে চিরস্থায়ী জীবন আখেরাতে বিশাল প্রাসাদের মালিক হতে পারি! আমাদের সবারই উচিত জান্নাতের নেয়ামত লাভের এই সুযোগ গ্রহণ করা। প্রতিদিন অন্তত দশবার সুরা ইখলাস পাঠ করা।
অর্থ ও উচ্চারণসহ সুরা ইখলাস
قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ – اللَّهُ الصَّمَدُ – لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ- وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ
উচ্চারণ: কুল হুয়াল্লাহু আহাদ, আল্লাহুস সামাদ, লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ, ওয়া লাম ইয়াকুল্লাহু কুফুয়ান আহাদ।
অর্থ: বলো, তিনিই আল্লাহ, এক-অদ্বিতীয়। আল্লাহ অমুখাপেক্ষী। তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাকে কেউ জন্ম দেয়নি। আর তার সমতুল্য কেউ নেই।