শুক্র. নভে ১৫, ২০২৪

শাহবাগ থানায় ৩৯১ জনের বিরুদ্ধে মামলা

জুলাই-আগস্ট গণ অভ্যূত্থানের মাঝামাঝিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ ৩৯১ জনের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানার মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সোমবার( ২১ অক্টোবর) বিকেল ৫ টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমম্বয়ক মাহিন সরকার বাদি হয়ে মামলাটি করেন।

মামলায় ৩৯১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে। এছাড়াও ৮০০ থেকে এক হাজার জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে।

মামলার প্রথম আসামী করা হয়েছে বিগত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। এছাড়াও আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী আরাফাতকে হামলা উস্কে দেওয়ার পেছনে ভূমিকা রাখার কারণে আসামী করা হয়েছে।

এছাড়াও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন এবং সাধারণ সম্পাক তানভীর হাসান সৈকতসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ টি হলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং ১৫ জুলাই হামলায় সরাসরি জড়িতদের আসামী করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের যেসব নেতাকর্মী হামলায় অংশ নিয়েছেন, তাদের অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে।

মাহিন সরকার বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিরাপদ করা এবং যারা হামলাকারী তাদের বিচারের আওতায় আনার জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে মামলা করেছি। মামলা করতে আমাদের কিছুটা সময় লেগেছে, কারণ তথ্য-উপাত্ত হাতে আসতে দেরি হয়েছে। এসময় তিনি অন্যদেরও মামলা দায়ের করার আহ্বান জানান।

মামলার এজহারে মাহিন সরকার উল্লেখ করেন, ১৫ জুলাই বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাসহ বহিরাগত আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অংশগ্রহণকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে। তারা নিরস্ত্র আন্দোলনকারীদের উপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে ইট, কাঁচ, কাঁচের বোতল, কাঠ, পাইপ, লোহার রড, লাঠি, হকিস্টিক, রামদা, আগ্নেয়াস্ত্র ও বিদেশি অস্ত্র দিয়ে দফায় দফায় হামলা চালায়।

তারা ককটেল বিস্ফোরণ করে ও হেলমেট পরে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালায়। সে ঘটনায় অন্তত ৩০০ শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন।

সমম্বয়ক আব্দুল কাদের বলেন, বিগত এক দশক ছাত্রলীগ ত্রাসের রাজত্ব করত। কথা বললে নির্যাতন করে থানায় দিত। শিক্ষার্থীরা যৌক্তিক দাবি নিয়ে মাঠে নেমেছিল। কিন্তু ১৫ জুলাই ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরদের শিক্ষার্থীদের উপর লেলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তারা ক্যাম্পাসের বোনদের উপর হামলা করেছে। ভাইদের পিটিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়। ১৫ জুলাই যে হামলা শুরু করে, তা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। আমরা দেরিতে হলেও আমরা আইনি প্রক্রিয়ার কাজটা শুরু করেছি।

ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করার দাবিও জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমম্বয়ক হামজা মাহবুব, আব্দুল হান্নান মাসউদসহ প্রমুখ।

By admin

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *