রবি. সেপ্টে ২২, ২০২৪

১৩ দফা দাবিতে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের মানববন্ধন

প্রফেসর ড. ইউনুস এর নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তীকালীন সরকারকে গার্মেন্টস শ্রমিকদের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানিয়ে নিহত গার্মেন্টস শ্রমিকদের ক্ষতিপূরন-হত্যাকান্ডের বিচার এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে গার্মেন্টস শ্রমিকদের আশু ১৩ দফা দাবি সমূহ নিয়ে নগরীতে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন-এর নারায়নগঞ্জ জেলা কমিটির মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (১৯ আগষ্ট) বিকাল ৫টায় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন-এর নারায়নগঞ্জ জেলা কমিটির উদ্যেগে নগরীর চাষাড়ায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত হয় এ মানববন্ধন।

গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন নারায়নগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি জনাব মোঃ হুমায়ন কবির এর সভঅপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক, রবিউল চৌধুরী এর সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন এর সহ-সভাপতি হিমাংশু সাহা, প্রধান বক্তা হিসেব বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সাধারন সম্পাদক রফিকুল ইলাম রফিক।

এ ছাড়াও আরও বক্তব্য রাখেন, মোঃ আবু সফিয়ান, মোঃ ইব্রাহিম খলিল, এডভোকেট সুমন মিয়া, মোঃ নুর আলম, জসিম উদ্দিন মোল্লা, বিল্লাল হোসেন, মোঃ মমিন উল্লাহ সহ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে এ সময় ব্ক্তারা বলেন, ছাত্র জনতার গণ অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে পূর্ববর্তী অগণতাত্রিক সরকারের পতন ঘটেছে।প্রফেসর ড. ইউনূস’কে প্রধান উপদেষ্টা করে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন হয়। যে সরকারের তত্বাবাবধানে বর্তমানে দেশ চলছে এই সরকারের কাছে দেশের গার্মেন্টস শ্রমিকসহ শ্রমিক এবং শ্রমজীবী মানুষের প্রত্যাশা
অনেক।

তারা আরও বলেন, ছাত্র গণ অভ্যুত্থানে মোট নিহত : ৬৫০, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন এর ৭ জন সহ গার্মেন্টস শ্রমিক ১১ জন, দোকান বিক্রয়কর্মী, রিটেইল শ্রমিক ৩৬ জন, নির্মাণ শ্রমিক ১৭ জন, রিক্সা চালক – দিন মজুর ২১ জন, শিশু ৬৭ জন।
কর্মসূচী থেকে নিহতদের ফ্রতি শ্রদ্ধা ও কৃজ্ঞতা জানানো হয় একই সাথে পূর্ববর্তী সরকারের এই সমস্ত কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা জানানো হয়। কর্মসূচী থেকে ছাত্র গণ অভ্যুত্থানের সূচনাকারী সকল ছাত্র নেতৃবৃন্দকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয় ৷

অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের কাছে ৪২ লক্ষ গার্মেন্টস শ্রমিকদের দাবী সমূহগুলো হলো-১. অবিলম্বে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের ৭ সদস্য সহ ১১ জন গার্মেন্টস শ্রমিক ও সকল শ্রমিক হত্যার বিচার, দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং নিহত পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ ফ্রদান করতে হবে। ২. ফেডারেশনের আহত ৫০ সদস্যসহ সকল আহত শ্রমিকের প্রয়োজনীয় এবং উচ্চতর চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে। ৩. জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন শতাধিক সদস্য সহ গ্রেফতারকৃত সকল শ্রমিককে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। ৪. গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য নির্ধারীত মজুরী অবিলম্বে বৃদ্ধি করতে হবে এবং নিম্নতম মজুরীর টার্ম পরিবর্তন কওে “লিভিং ওয়েজ” অথবা “শোভন মজুরী’কে” আইনগত ভিত্তি দিতে হবে। ৫. অবিলম্বে সারাদেশ এবং সকল সেক্টর এবং সকল শ্রমিকের জন্য প্রযোজ্য এবং গ্রহণ যোগ্য জাতীয় নিম্নতম মজুরী ঘোষণা করতে হবে। ৬. ৪২ লক্ষ গার্মেন্টস শ্রমিকসহ নিম্ন আয়ের শ্রমিকদের জন্য অবিলম্বে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে। ৭. ইপিজেড-এ প্রচলিত আলাদা আইন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মূল সংবিধান পরিপন্থি, যা আইএলও কনভেনশন ৮৭ ও ৯৮ এরও পরিপন্থি। তাই অবিলম্বে ইপিজেড এর জন্য প্রচলিত আলাদা আইন অবিলম্বে বাতিল কওে দেশে প্রচলিত শ্রম আইনের আওতায় ইপিজেডকে আনতে হবে, যেখানে শ্রমিকেরা মত প্রকাশ, সংগঠন করা এবং দরকষাকষি করার অধিকার পাবে। ৮. আইএলও কনভেনশন ৮৭ ও ৯৮ এর আলোকে বাংলাদেশে বর্তমানে প্রচলিত শ্রম আইন ও শ্রম বিধিমালা’কে সংস্কার করতে হবে।

৯. বাংলাদেশের গার্মেন্টস সহ অন্যান্য সেক্টরে ট্রেড ইউনিয়ন গঠন এবং ট্রেড ইউনিয়ন কর্মকান্ড পরিচালনায় সকল ধরনের আইনী, মালিকসহ সকল সামাজিক বাধা বিপত্তি দূর করতে হবে। ১০. নারী শ্রমিকদের সম-অধিকার, সম-মজুরী, পরিবার, রাষ্ট্র, সমাজ ও কর্মক্ষেত্রে সম-অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। ১১. মেগা প্রকল্প এবং মেগা দুর্নীতি বন্ধ রেখে দেশের গার্মেন্টস শ্রমিক, নির্মাণ, দোকান, কৃষক শ্রমিকসহ নিম্ন আয়ের মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের কাছে দাবী জানাচ্ছি। ১২. বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত ১৫ লক্ষ কোটি টাকা ফেরত এনে দেশের শিল্পায়ন ও কর্মস্থানে বিনিয়োগ ও পাচারকারীদের শাশিÍ নিশ্চিত করতে হবে। ১৩. বাংলাদেশের উন্নয়ন ও শিল্পায়ন আরো গতিশীল করতে পুজি ও শ্রম গুরুত্বপূর্ণ। তাই অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে পুজিবাদী এবং গার্মেন্টস শ্রমিকদের নিয়ে এক সাথে আলোচনায় বসে বিদ্যমান সমস্যা সমূহ সামাধান করতে হবে।

By admin

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *