ছয়টি গ্রহকে একই সারিতে দেখার বিরল মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষী হতে চলেছে বিশ্ববাসী। স্থানীয় সময় সোমবার (৩ জুন) থেকে আগামী এক সপ্তাহ বুধ, বৃহস্পতি, শনি, মঙ্গল, ইউরেনাস এবং নেপচুনকে সারিবদ্ধভাবে দেখা যেতে পারে। প্রতিদিন সূর্যোদয়ের আগে গ্রহগুলোর এমন বিরল প্যারেড দেখা যেতে পারে। ভারত, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশ থেকে এই দৃশ্য দেখা যাবে।
গ্রহের সারিবদ্ধতা বলতে এমন একটি ঘটনাকে বোঝায় যেখানে সৌরজগতের একাধিক গ্রহকে পৃথিবী থেকে এক সরলরেখায় অবস্থান করতে দেখা যায়। একই সারিতে বুধ, বৃহস্পতি, শনি, মঙ্গল, ইউরেনাস এবং নেপচুন গ্রহকে সবচেয়ে ভালো করে দেখা যেতে পারে ৩ জুন। তবে গোটা সপ্তাহজুড়েই দেখা যাবে। লাইভমিন্টের তথ্য।
বিজ্ঞানীদের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, সূর্যের ৬টি গ্রহ কাছাকাছি আসতে শুরু করেছে। পৃথিবী থেকে এই ৬টি গ্রহকে এক সারিতে দেখা যাবে। এরকমভাবে এক সারিতে একাধিক গ্রহ অবস্থান করলে তাকে মহাজাগতিক পরিভাষায় বলা হয় ‘প্ল্যানেটারি অ্যালাইনমেন্ট’। এতে গ্রহগুলো এত কাছাকাছি চলে আসে যে পৃথিবী থেকে তাদের একসারিতে মনে হয়। ৩ জুন থেকে পরিষ্কার আকাশে এই দৃশ্য দেখতে পাওয়া যাবে।
বিজ্ঞানীদের দাবি, ৩ জুনের আগে সূর্যের অনেকটা কাছে চলে আসবে সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতি। তার পাশে আর কিছুদিনের মধ্যেই চলে আসবে বুধ। তারপর একে একে অন্য গ্রহগুলোকেও দেখা যাবে ওই সারিতে। প্ল্যানেটারি অ্যালাইনমেন্ট’ দেখার সবচেয়ে ভালো সময় হলো ভোররাত। অর্থাৎ সূর্য ওঠার ঠিক আগে। ওই সময় আকাশের পূর্ব দিকে তাকালে শনি গ্রহ দেখা যাবে। হালকা হলুদ আভা থাকবে তাতে।
শনিগ্রহের ঠিক নিচে দেখা যাবে লাল রঙের মঙ্গলকে। পূর্ব দিগন্ত থেকে ১০ ডিগ্রিরও কম উচ্চতায় দেখা যাবে বুধকে। মঙ্গলের সামনে থাকবে বৃহস্পতি। আর সারির শেষদিকে থাকবে ইউরেনাস এবং নেপচুন। এই দুটি গ্রহ খালি চোখে দেখা পাওয়া যাবে না। এছাড়া শুক্র গ্রহ সূর্যের অনেক কাছাকাছি থাকায় সেটাও দেখা যাবে না। এই ছয় গ্রহের সঙ্গে থাকবে এদের কৃত্রিম উপগ্রহগুলো।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মেঘমুক্ত আকাশ থাকলে সূর্য ওঠার ২০ মিনিট আগে একে একে গ্রহগুলো পূর্ব দিকে দৃশ্যমান হবে। তবে, আবহাওয়া খারাপ থাকলে বা আকাশে মেঘ থাকলে তা দেখা যাবে না। এমন সারিবদ্ধ পরিস্থিতিতে গ্রহগুলোকে স্বাভাবিকের তুলনায় আকারে অনেকটা বড় দেখানোর তথ্য সঠিক নয়। নিখুঁত সরলরেখায় না আসলেও গ্রহগুলোর কক্ষপথ অনেকটা একই সমতলে থাকার ফলে এদেরকে একসারিতে দেখা মিলবে।
নিজেদের স্বাভাবিক অবস্থাতেই থাকে গ্রহগুলো। আকাশ পরিষ্কার থাকলে বাংলাদেশ থেকেই এই দৃশ্য দেখা যাবে আগামী কয়েকদিন।