শনি. সেপ্টে ২১, ২০২৪

পুলিশের মনোবল ফেরাতে প্রথমে কাজ করবো-পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার

নবাগত পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদারের সাথে স্থানীয় সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মত বিনিময় সভায় নারায়ণগঞ্জ জেলায় মাদকের ব্যপারে জিরো টলারেন্স এর ঘোষনা করেন তিনি।

সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে এক মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে সাংবাদিকদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন নবাগত এই পুলিশ সুপার।

তিনি আরও বলেন, পুলিশের কেউ কোন অপকর্মের সাথে জড়িত,আমাকে প্রমানসহ দিবেন আমি অবশ্যই ব্যবস্থা নিবো। কিশোর গ্যাং নিয়ে যদি এখন কাজ করতে যাই, তাহলে উল্টো বিপদ আছে। কি বিপদ? সবাই এক হবে, আবার আমাদের থানা পুড়ানো শুরু হবে। আগে আমরা প্রয়োজন অনুযায়ী কাজ গুলো শুরু করি।

সাংবাদিকদের কিছু প্রশ্নের উত্তরে প্রত্যুষ কুমার মজুমদার আরও বলেন, আপনারা বলছেন সাংবাদিক ভাইয়েদের নামে মামলা হচ্ছে। আসলে যে কেউ বাদি হয়ে মামলা করতেই পারে। মামলা হওয়ার মানে তো এই না যে তার জেল-হাজত হয়ে যাচ্ছে বা সে অভিযুক্ত হয়ে যাচ্ছে। মামলাটা হলো প্রথমিক পর্যায়। এরপর আমরা ওইটা তদন্ত করবো। তারপর যদি তার বিরুদ্ধের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে সে অভিযুক্ত হবে, সতত্যা না পাওয়া গেলে তাকে অভিযোগ থেকে বাদ দেওয়া হবে। তদন্ত না করে কাউকে অহেতুক গ্রেফতার করবে না পুলিশ। আমি নিজেই প্রথম এখানে এসে যানযট দেখে বলেছি, এটাতো কোন শহরের অবস্থা না। আমি সাথে সাথে আমাদের পুলিশদের ডেকেছিলাম, টিআইদের ডেকেছিলাম। তারাও মানসিক ভাবে একটু খারাপ অবস্থায় ছিলো। আমি তাদের উজ্জিবিত করেছি। আমি বলেছি, প্রথমে যানযটের সমস্যা সমাধান করতে হবে। পাশাপাশি ভলেন্টিয়ার দেওয়া যায় কিনা সে বিষয়ে আমরা কথা বলেছি। আপনাদের ভেতর থেকেও কারো দশটা সিএনজি বা দশটা অটো আছে; এসব নিয়ে তদবির করবেন না প্লিজ। তাহলে আমি কিন্তু কাজ করতে পারবো না।

পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার গণমাধ্যমক কর্মীদের আরও,বলেন, একটি প্রতিকুল পরিস্থিতিতে আমরা এখানে পুলিশের দায়িত্ব নিয়ে এসেছি। এই দায়িত্ব পালনে অনেক প্রতিবন্ধকতা আছে। অনেক চড়াই-উতরাই আছে। কারণ আমাদের পুলিশের মনোবলটা এখন ভেঙ্গে গেছে। গত ৫ আগস্টের পর আমাদের বিভিন্ন থানা-অভিস ভাঙ্গচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। পুলিশের মনোবলটাও ভেঙ্গে গেছে। আমরা পুলিশের মনোবল ফেরাতে প্রথমে কাজ করবো। পাশাপাশি জনগনের মধ্যেও পুলিশের প্রতি যে আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছিলো, সেই জায়গা থেকে উত্তরণের আমরা সর্বচ্চ চেষ্টা করবো। এক্ষেত্রে সবার আগে সহযোগীতা প্রয়োজন আপনাদের। আপনারা যদি অতিতের মতো সহযোগীতা না করেন, তাহলে আমরা সব পুলিশ মিলেও জনগনের আস্থা ফেরানো সম্ভব না। আপনারা আমাকে সহযোগিতা করবেন, আমার পুলিশকে সহযোগিতা করবেন। আপনারা অবশ্যই গঠনমুল সমালোচনা করবেন, সেটাকে আমি সাধুবাদ জানাবো। আপনারা আমদের ভুলত্রুটি শুধরে দেওয়ার জন্য যদি বলেন যে এইখানে এটা হচ্ছে, কারণ আপনারা এখানকার স্থানীয়। আমরা আসছি চাকরি করতে। আমাদের চেয়ে আপনারা ভালো জানবেন, এখানে কোথায় কি হচ্ছে। আপনারা আপনাদের কলমের মাধ্যমে অপরাধ তুলে ধরেন। আর আমরা আইনগত ভাবে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিতে কাজ করি। আমরা শুধু নির্দিষ্ট একটা পোশাক পরি আপনারা পরেন না, এটাই আপনাদের ও আমাদের মধ্যেকার পার্থক্য। আমি মনে করি, নারায়ণগঞ্জের সবাই আমার আপনজন, শুধু দুস্কৃতকারীরা ছাড়া।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ আমীর খসরু, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) চাইলাউ মারমাসহ নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা ।

By admin

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *