ভোটের হারের অনুপাতে প্রতিনিধিত্ব রাখার পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের প্রস্তাব রেখেছেন নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা। এতে থাকবে না মনোনয়ন বাণিজ্য, দুর্নীতি কমবে ৮০ শতাংশ। পিআর সিস্টেমে নির্বাচন দেওয়ার পরামর্শ তাঁদের। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারে করণীয় শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা এ প্রস্তাব দেন।
সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির ক্ষেত্রে ব্যক্তি-প্রার্থীর পরিবর্তে নির্বাচন হয় নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে। এক্ষেত্রে ৩০০ আসনে নয়, পুরো বাংলাদেশ হবে একটি আসন। নির্বাচনে যে দল মোট প্রদত্ত ভোটের যত শতাংশ পাবে, সেই অনুপাতে সংসদে প্রতিনিধি পাঠাতে পারবে। বিশ্বের প্রায় ১০০টি দেশে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর পদ্ধতি অনুসরণ করছে।
বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারে করণীয় শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে এ নতুন পদ্ধতির প্রস্তাব দেওয়া হয়। সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন এ বৈঠকের আয়োজন করে। বক্তারা বলেন, মনোনয়ন বাণ্যিজের কারণে দেশে গণতন্ত্র সুসংগঠিত হয়নি।
এ ব্যাপারে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেন, ‘যতদিন পর্যন্ত এই নমিনেশন প্রথা থাকবে, ততদিন পর্যন্ত কোনো করাপশন মেটানো সম্ভব না। পিআর সিস্টেমটা বাংলাদেশি সিস্টেমের মধ্যে এনে ওই জিনিসটাই এখানে দিতে হবে, যাতে আসলে পার্টিকে ভোট দেবে, প্রার্থীকে নয়।’
নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব (অব.) জেসমিন টুলি বলেন, ‘একটা সিম্পল হিসাবেই বলা যায় যে, আমাদের দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। আপনি আইন ও সিস্টেমকে যত কড়াকড়িই করেন না কেন। এটা সম্ভব না।’
কারা নির্বাচন কমিশনার হবে, কোন যোগ্যতায় নির্বাচন কমিশনার হবেন, তা আগে থেকে নির্ধারণ থাকা উচিত বলে মত দেন বিশেষজ্ঞরা। এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘ইলেকশন কমিশন নিয়োগের জন্য ইনটেগ্রেটি, সাহস ও অতীত অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’
নির্বাচন বিশ্লেষক ড. আব্দুল আলীম বলেন, ‘কারা ইলেকশন কমিশনার হবেন, এ নিয়ে একটি ক্লাইটেরিয়া থাকতে হবে। বিবি রাসেলের নাম ছিল গতবার। একজন বিকাশ ব্যবসায়ীর নাম ছিল নির্বাচন কমিশন হওয়ার তালিকায়। তাদের নাম কেন আসবে? আমাদের এই আইনের মধ্যে দূর্বলতা থাকার কারণে এসব নাম আসছে।’
কত শতাংশ ভোট না পড়লে ভোট বাতিল হয়ে যাবে সেই পদ্ধতি থাকা উচিত বলেও মত দেন বক্তারা।